Tuesday, November 25, 2008

বদলে যাওয়া সুর্যাস্ত

বদলে গেল সে এবং অন্য তুমি
বদলে গেলে অনেকটা

সামনের দেয়ালের মত

ফারাকটা সমান্তরাল হতে হতে খানিকটা কাছের ছিল

সামনের আয়নার মত

বদলে গেল সে যেমনটা ছিল তুমি
বদলে গেলে অনেকটা

সোজা এক রেখায় ভর করে একেঁ যাচছিলাম একটি গ্রামের দৃশ্য
কচি হাতের ছাপে
রঙিন গ্রাম

সামনের খোলা আকাশের মত

অন্ধকার বিচ্ছেদে কাতর অথচ তারার ঝলকানি

বদলে গেল সে এবং তার লাল টিপ
যেমনটা বদলে গেলে -

সূর্যাস্ত

একটি হলুদ শহরের বৃত্তান্ত

নীল জোছনায়

কালবিলম্ব না করে আমি খুজিঁ পথরুদ্ধ সভা এবং
ভগ্নাংশের ত্রুটি এড়িয়ে - প্রচ্ছন্নতা

নিঝর্র অবয়বে দুপুর দূরত্ব চষে ফেলি রাতের অন্ধকার
আলোর আলেয়ায় নীল জ্যোছনা ও জলের খেলায় ক্রমশ অনুবদ্ধ হয়

হয় হয় এবং হয়তবা ; কালবিলম্ব না করে

আমি খুজিঁ এক মুঠো শিশির বৃষ্টি

শীতের কুয়াশায় জমাট পুকুর ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ঘেমে যাওয়া পিঠের কেশরে তাহার লবনাক্ত ছাপ

বয়ে যায় শ্মশান নিস্তব্ধতায় অমিলন উষ্ণতা

দূর হতে থাকে ঘনত্বের সবকটি আলো-ছায়া ; তাহার লাগি

তার লাগি

অসমাপ্ত কবিতা

একটি লেবু গাছ অনায়াসে বদলায় সবুজ চা পাতা
এবং
বন্ধ দরজার সামনে পুরোনো কপাট

এই দুটির কথা ভাবতেই পার করে দিলাম গত বসন্ত ;
আর এখন কালো কালো মেঘের আনাগোনায় ভীত
একটি ইউক্লিডিয় জ্যামিতির কথা ভাবছি

তুমি -

ও বাতাসে দোদূল্যমান অনেকগুলো আটপৌরে কবিতা একসাথে

কিংবা বিভাজ্য লেবুর দু'ফোঁটা

সোনালী হাসের কথা-

সোনালী হাসের কথা-
----------------------

তিনি কী ভাবছেন রোশনাই জ্বেলে যাবে
ঋতুহীন বেদনা
থেমে থাকা কাশবনে
একাকী হাঁস ; সোনালী হাঁস

অসমাপিকা ক্রিয়ায় - প্রতিক্রিয়ায়

তিনি কী ভাবছেন নিভে যাবে সান্ধ্য আলো
রসায়নে - রসায়নে
ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে আসা
লবনাক্ততার চোরাবালি
ছুঁয়ে ছুয়েঁ ক্রমশ বিন্দু

লেপ্টে থাকা সবুজ ঘাসের মসৃন পিঠ জুড়ে
তিনি কী ভাবছেন - সোনালী হাঁস এবং দূরাকাশ

এক হবে অথবা ছড়াবে লেলিহান শিখা

স্বপ্নভ্ঙ্গের সুর

সন্ধ্যা হলেই
স্বপ্নভঙ্গের সুরগুলো অযথা আনচান করে ফেলে

ঝুলানো পর্দা - অগোছালো কাপড় - সদ্য ছাদ হতে নেমে আসা
কমলা রোদ

আমি দেখি নগ্ন পা -

যত্রতত্র লাল - নীল ব্লক এবঙ কিংকর্তৃব্যবিমূঢ় সন্ধ্যাবাতি
এবং
যতবার গীটার ছুঁয়ে দেই স্বপ্নের সুর উঠে
বাজে টুংটাং - টাংটুং

সুরে সুরে

স্বপ্নগুলো নামতে থাকে সিড়ির পর সিড়ি
অচেনা চাঁদর ঝুলে থাকে - কোনার ঘরটাতে

আমি দেখি পিরামিড - সাদা রং মুছে গিয়ে কালো ছায়ার আড়াল

দেয়ালে ঝুলানো

হাটঁতে থাকে তারা রাতের ঘুম পেরিয়ে - প্রতিরাত শেষে ভেংগে পড়ে কোন এক দ্রাঘিমায়

আমার অরণ্যে হাঁটছে কে একজন

আমার অরণ্যে হাঁটছে কে একজন

এক
------
অজস্র তরঙ্গে নোনা জল নেমে আসে
কষেরুকার গহীন অরণ্যে
জোছনা রাতের নির্ভার আলোয় ছুটে যায় আলেয়া
খুউব কাছের রুপালী দ্বীপে ক্রমশ বেঁজে চলে আগুয়ান
ফেনায় ফেনিল দেহ ;

বাতিঘর জেগে থাকে অতীন্দ্রিয় অনুভবে -
ভেংগে পড়ে তট বারংবার অতীব ঘনত্বে -
গুহা প্রচ্ছদে রোপিত হতে থাকে স্বপ্নীল বীজ -

তবু ও আমি খুঁজি গহীন অরণ্যে

ক. সবুজ ঘাস এবং বাদামীসরীসৃপের পদচিহ্ন
খ. গলনাঙ্কে মেতে উঠা মোমের পুতুল
গ. কুঁড়ে ঘর জুড়ে বেড়ে উঠা কাটাবন
ঘ. কামজ তপ্ততায় ঘন্টা ধ্বনি
ঙ. বুননে বেড়ে উঠা উপত্যকায় লাল রং

দুই
---
একজন খুনীর হাতে বদলে যেতে থাকে কফির রং
লাল
হতে লাল রং ছড়ায় দীপ্তি
রাতের আকাশে কালো রঙ ছুঁয়ে যায়
বিপ্রতীপ কোণের সন্ধ্যা
জ্বলে উঠা নিয়ন সাইনজুড়ে
আতংক; আতংকিত নগরীর দেয়াল জুড়ে
ফ্ল্যাশ ব্যাক একের পর এক
নামছে পর্দা সিনেপ্ল্যাক্স
ভেতর কার ; কার হাতে লোহিত কনা
ধাবমান হতে থাকা শুভ্রতায়
বদলে যেতে থাকে ধারালো আঘাতে
টুপ টাপ পড়ে যেতে থাকা হিমোগ্লোবিনজুড়ে
মিথ হয়ে পড়ে সৃষ্টিসুখ-একজন খুনীর হাতে
মগ্ন কফির মগ ক্রমশ লাল হতে থাকে
ধোঁয়ার আড়ালে
একদিন শোনা যায় তারহীন তরঙ্গে রেড এলার্ট-

আমার অরণ্যে হাঁটছে একজন ঠান্ডা মাথার খুনী কিংবা
কে একজন
যাহার হরমোনে পাল্টে গেছে
গ্রীন হাউস এবং তাহার সবুজ বন্ধনী

আড়চোখে সফেদ পাখি

ক্লীব হয়ে যাওয়া পথের উল্লাসে দেখি
আড়চোখে সফেদ পাখি

বসে আছে কার্নিশে : অবয়বে উড়ে যেতে ভয় তার
তবুও হৃদস্পন্দনে ঘৃণিত হতে দেখি

এযাবত কালের কুহেলিকা ; প্রণয়ে বার বার

জলপাই রং ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসে তবুও
একদিন ভোর হবে জেনে
কুয়াশায়
পাড়ি দেই অনন্ত পথ ;

মীথ হয়ে যাওয়া সফেদ পাখির চোখে
সৌর কলঙ্ক ছুঁয়ে যাই
ক্রমশ
পতিত শস্যকনার ছড়ানো জলছাপ জুড়ে

আজো -

ভয়

ভয়

ভয় পেয়ে যাই আচমকা একা হতেই
সান্ধ্যবাতির আড়ালে নিভুনিভু
আমার ছায়াগুলো ঘনো হতে থাকে
ঘনত্বের রসায়নে মিশে থাকা
উষ্ণ প্রসবনে -

রাতের কথা ভাবতেই মনে পড়ে
নড়েছে পর্দা আর ভায়োলেট সিফন
দুলে দুলে
বৃষ্টিবাহন জুড়ে ছড়ায় আলিঙ্গন
ক্রমশ মোহনে-

তবুও আমি একা হই ;
ক. আল্ট্রা-কমিকস প্রচ্ছদে
খ. সফেদ হই পায়রার ঝাঁকে
গ. আর্টওয়ার্ক খুঁজি সযতনে
ঘ. ধীরে ধীরে বস্ত্রহারা হই

মনে পড়ে যায় যতবার একাকী জোছনায় শুণ্যতা দেখি আকাশজুড়ে নীল রং নিয়ে আসি ত্বকে ত্বকে এলিয়েন হতে থাকি নিজের কাছে

ভয় পেয়ে যাই বর্ণ বদলে - ক্রমশ

বোধ

বোধ
------
ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে সামনের ক্যানভাস
এবং
অশুণ্য কাঠামোতে উড়তে দেখছি
একটি ঘড়ির দুটি কাঁটায় কাতর চড়ুই
সফেদ শাড়ীর বাঁকে বাঁক আর্টওয়ার্ক
অসম পার্থক্যে একটি দাগ এবং একটি টিকটিকি

এবং
ডাকবাক্সে একটি অস্বচ্ছ কাঁচের আড়ালে
মাঝরাত্রির হাঁটা পথ

-যেখানে

প্রসারিত বোধের অপভ্রংশে
আমার কয়েকটি হাড় জাপটে নিচ্ছে
ক্ষন; কিছু ক্ষন

দুটি চাঁদের অন্য কথকতা

এক কবির বেদনায় ক্রমশ শানিত দ্বৈত আলোর ছায়ায়
ধীরে ; অতি ধীরে জানালার পর্দায়
লেগে যায়
অমলিন চকোলেট মাখা স্বপ্নে
অনেকগুলো চলমান অবয়ব ;

-ফোঁটা ফোঁটা
-ভেঁজা ভেঁজা

সেদিনের সেই রাতের সাদা-কালো ছবির অপসৃয়মান
অনুলিপি ট্রেস করে
আমি তুলে নেই দুহাতে
দুটি চাঁদ
কাছাকাছি ; অতি কাছে অনেকগুলি রেখার উপর
রেখা তবুও খেলা করে
নিহিত সংলাপ

অতঃপর আমি ছুঁয়ে নেই দুটি চাঁদ
একটি আরেকটির লাগোয়া রং নিয়ে এঁকে ফেলি
ধূসর বিকেলে বৃষ্টি ঝরা কদম ছায়ায়
সেই রাতের দুটি চাঁদ এবং
কিছু বলবো বলে করে বলা হয়না শেষ পৃষ্ঠাজুড়ে

অন্য কথকতা-

একটি ক্যালকুলেটর এবং তাহার সঙ্গম

একটি ক্যালকুলেটর ছুঁয়ে পঞ্চইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে পড়ে রাতের নির্ঘুম

এবং

ঝুম ঝুম বৃষ্টিতে দেবদারু

রাজপথ ক্রমশঃ ঘনো হয়, ঘনত্বে আরো ব্যাকুল
প্রলম্বিত রেখায় ডিজিটাল ফোঁটা

তারা বের হয় পথে : অন্য পথে অথৈ জল তবুও প্রবাস

নুয়ে পড়ে দেব এবং তাহাদের হাতের সব দারু ধীরে ধীরে
একটি ক্যালকুলেটর ও তাহার নিয়ন আলোয় এক হয় সংযমে সঙ্গম

মনোটিউনড হয়ে এলে
বৃষ্টি কমে কেউ একজন বলে উঠে ধীরে

আমি ভিজবো ক্রমশ একটা রাতের নিসংকোচে

একটি দীর্ঘকালীন সময়রেখায়

সবুজ দেয়াল হতে দেয়ালিকা

জলপাই পাতায় ভর করে সাঁজোয়া বহর

বেগুনী আভায় অনেকগুলি আল্ট্রা সাউন্ড

এভাবে জড়ো হতে তর তর করে উঠে যেতে থাকে মানিপ্ল্যান্ট -

লাল সীমানা দেয়া মেঝেতে আজ পিচ্ছিল পলেস্তরা
কাঁপতে থাকে অর্থব
এবং
বিছানায় রঙ্গিন চাদর তবুও
আমি অযথা কিছু বলতেই বৃষ্টি নেমে আসে বারান্দায়
ট্রান্সপারেন্ট ত্বকের প্রচ্ছদে

আমি তার হাত ধরে নামতে থাকি সিঁড়ি বেয়ে-

বেঁজে উঠে লাল রেশমীর অবয়ব আকাশজুড়ে
যখনি বেয়নেট বিদ্ধ হতে থাকে
লুকানো টিকটিকির বাচন মহিমায়

একটি দীর্ঘকালীন সময় রেখায় ঘড়িরা যেভাবে আবর্তিত হতে থাকে
সেভাবেই স্খলন ঘটে জানালার পর্দায়

মৃৎশিল্প

একদিন মৃৎশিল্প ফিরে আসবে
কলমী লতার আড়ালে
কচুরি পানার সাঁজঘরে
মৃত মাছের মুখগহ্বরে

- যেখানে ম্লান হতেছে উড়ন্ত পাখির কলরব

পোড়া গন্ধে
গভীরতর মাটির ফুসফুস অবধি জেগে উঠবে সুকঠিন নির্মান হাত

সেই হাত হতে ছিন্ন হয়েছে সুমলিন বৈকাল বেলা কড়ে আঙ্গুল জুড়ে
রচিত মাতমে
ধ্বসেছে নিষ্প্রভ শিরোরেখা

সেই হাতের পঞ্চতন্ত্রে অবিকল মৃন্ময়ী প্রসন্নতায় বেগুনী
হতেছে
একাকী এক মৃৎশিল্প এবং
তাহার হাত

চাপা পড়া ইটের আর্তনাদে ধীরলয়ে
একে একে খসাবে অনন্য আবরন
ফিরে আসবে মৃত ঘাসের হলুদ আলপনায়

সে প্রসঙ্গ

১ : অনুভবে
------------

সে চোখ বন্ধ করে নিলে
সহসাই ছুঁয়ে যায়
মিশ্র রং
অথচ আমি দুপুর ঘনালে দেখি অনীল আকাশে
চন্দ্রিমা
ঘনো হয়ে উঠা বায়বীয় সন্ধ্যা

২ : বিরহ
---------
পশ্চিমাকাশ কৃষ্ণচূড়া হতেছে জেনে
কাঁদলে অঝোর ধারায়
আমি নিশ্চুপ ;

স্থানান্তরে
বদলে যেতে দেখি
প্রমত্ত আলোয় একাকী এক মেহেদী হাত

৩ : সমর্পন
-----------

যাকে ভালবাসি তার মগ্নতায়
আজো গ্রহণ ঘটে যায়

চন্দ্রালোকে
সূর্যালোকে -

অতৃপ্ত মননে হেঁটে যায় সুক্ষ মাটির ক্রিয়া
বদলে যায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শোনিত কমলালেবুর স্বাদ

৪ : একাকীত্ব
------------
ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মতো অসীম প্রশস্থতায়

আমি নিজেকেই একাকী
অবিদ্ধ করে ফেলি

সযতনে
সগোপনে

৫ : ভাবনা
-----------
সে কী আজো তেমনতর ছায়ায় এঁকে ফেলে
লাল শাড়ীর লাগোয়া
মসৃন সিঁদুর

সে কী আজো আয়ত চোখে কাজল এঁকে ফেলে
গভীর কালো উষ্ণতায়
একাকী এক আয়তন

৬ পুনশ্চ :
---------
তাকে বলি কবিতাগুলি এমন হয়
তাকে বলতে ইচ্ছে হয় কবিতাগুলি এমনতার আগলে রাখে

তাকে বলা হয় না কবিতার আবহে আমি তাকেই অধিকতর ভালবাসি

সে জানত না

সে জানত না-

ক. সবুজ প্রসাধনে অন্তরীন হয়ে পরা আমার দীর্ঘশ্বাসে একটি দেয়াল জেগে থাকে রাত্রিশেষের প্রশস্থতায়।
খ. অর্ধাংগের সঙগোপনে আমার আমি মৃতবাক হওয়ার প্রলোভনে ছেড়ে যায় হলুদ নদীর স্বচ্ছ জলধারা।
গ. কখনো ভীত হই ; শংকিত হই এবং একা একা মুছে ফেলি ধূসর জলছাপ ।
ঘ. ক্রীড়াসূলভ বাক্যালাপে ক্রমশ ছাইদানি জুড়ে একেঁ ফেলি প্রস্তরনগরীর ধ্বংসাবেশষ।
ঙ. নীল হয়ে যাই বেদনায় ; অতপর নীলাকাশ ছুঁয়ে যেতে কর্নিয়া ভেজাই ।
চ. ইথারে যখন ভেসে থাকে তাহার ডানাগুলো সে জানত না, আমি ক্রমশ নীল মানব হয়ে যাই।