Tuesday, April 29, 2008

ঋতুহীনতায় লেখা কবিতা



-অরণ্য

শিকড়

মানুষেরা নিজেদের চুল ছিঁড়ে ফেলে
যখন সড়ক দুভাগ হয়ে উঠে আসে
গাড়ি বরাবর

ত্বকের ওপর ঘাস জমে
বিব্রত মানুষগুলো নিজ নিজ আঙটির ভেতর
দেখে ফেলে চৌবাচ্চার গাঢ় রঙ
ফিকে হওয়া চোখ

জিভের লবণজল বেয়ে বেয়ে গাছ ওঠে
বিমর্ষ মানুষেরা ক্ষয়ে যাওয়া গাড়ির ভেতর
নিজেদের চোখ খোঁজে

সড়ক উল্টিয়ে খোঁজে
স্বাদহীন জিভের উত্সমুখ

-মাহফুজ কবির

Sunday, April 13, 2008

ক্ষয়িষ্ণু অনুভব

আমি বিদগ্ধ চোখে তাকিয়ে নিচ্ছি
শানিত স্বপ্ন
দহন হতে অন্তর্দহন

লিফটের ভাঁজে ভাঁজে কেঁপে উঠা কামরাঙ্গা স্বাদ
জিভের তালুতে তালুতে ভিজেছে
অনাবৃত স্পন্দনে
শোপিস করে রাখা লিপস্টিক
ফরমালিন মেশানো রসায়নে মিশেছে ততবার

প্রতিবার চোখেরা খুজঁছে পাপমুক্তি ; পবিত্রতার অন্তর্দহন

আমি শোষিত চোখে বার বার শুষে নিচ্ছি
ঔষধ সৌরভ
অনায়াসে

অনায়াসে

যেন একটি ক্ষয় রোগ...

Saturday, April 5, 2008

ক্ষুধাহীন জীবের হ্রাস-বৃদ্ধি

অনুদিত হতেছে যে পর্দা
তার ঘুঙ্গুর শব্দে মাতম জাগছে দেয়ালে, দেয়ালে

এক পশলা বৃষ্টি হন হন করে সরে গেলে শহরের উপকন্ঠ
সবুজ বৃক্ষ জন্মায়

কার্নিশে ; কিচেনে

প্রলম্বিত ফার্ন উচুঁ হতে হতে ছাদ ছোঁয়, বিকষিত বীজ

বীজদানা ; দানবীয় ক্ষিধা খেতে থাকে প্রোটিন
হাড়ের ভেতর দিয়ে সরু তার ছিড়ে যায়
তরঙ্গ অবধি

অর্ধা-অর্ধি স্বপ্নে সকালে আর বিকেলে ভ্রমন দেখি,

আলতো নিয়ন বাতির ঘোরে, শাওয়ারের মলিন ক্ষনে
হাড্ডিসার যদি বলি কিংবা
নীরব

কোন কথায়

মাতম হতেছে টাঙ্গানো জলছাপে; প্রার্থনায়
টিভি পর্দায় ;
বেতারে

ছাপার কাগজে, বৃষ্টিহীন চাই কাল রাজপথ এবং
অসবুজ মাঠ ধরে একেঁ নেবে

অন্ধকার রাতের নিভু আলোয়
ক্ষুধাহীন জীবের হ্রাস-বৃদ্ধি
--------------------

এই লেখাটি এখানেও পাবেন =>

Friday, April 4, 2008

দূরতমা, ভাবছি চলে যাবো

প্রশান্তির মূর্চ্ছনায় মৃত প্রায় মানুষ যেভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে

আমি দেখে নেবো তার সবকিছু

তারপর হেঁটে যাবো খুঁড়ে রাখা মাটির কাছে

ভাবছি তোমাকে একগুচ্ছ নীল দেবো যাওয়ার পথে
অদূরের রাত্রি পেরোতেই পর্দানশীন হতে থাকা
বিছানার কোল ঘেষে নেমে আসতেই মলিন গাউন
মখমলে প্লাবিত রুপকথার হাল ধরে
মৌনতায় ঢেকে দেবো

কালো কালো গন্ধে মাতোয়ারা শোকে
বিমর্ষতা আর নয়
আমি হেঁটে যাবো আকরিক ব্রীজ ধরে
পার হতে পশ্চিমাকাশ ছুঁয়ে যে মেঘ নেমে আসে আলতো
তুমি তার সীমানা ঘিরে নিজের অপচ্ছায়ায় ঘুরে ঘুরে
ফিরে আসবে বৃত্তের পরিধিতে অর্থহীন দ্যোতনায়

নম্রতায় কর্ণিয়াজুড়ে বাদলের ঘনঘটা
শীতের নগরজুড়ে
আমি এঁকে যাবো সারি সারি কৃষ্ণচূড়া সারা পথ দুদিকে যাবে চলে ডিভাইডার বুকে নিয়ে তুমি কাঁদবে নাকি হাসবে ভাবতেই নিজেকে কমলা রোদে পোড়াবে কুয়াশায় ভেঁজাবে নিজের অসময়ের উষ্ণতা

দূরতমা, ভাবছি চলে যাবো
যেদিন রাত্রিবাস হবে অমনিবাশ
যেদিন সকাল হবে কালো ধোঁয়ায়

সবকিছু বদলে গেছে

এক চিলতে রোদ এসে পরতো
ছোটবেলায় যখনি
জানালার ধার ঘেষে
যে গলিটা গেছে দূরতমা
তোমার বাড়ীর সদর দরজায়।

জানালার রড ধরে
একাকী নিজের মত
করে অধীর আগ্রহে।

ভাবতাম কত কি !!!
স্কুলে যাওয়ার পথে পথে
ছিপ ছিপ শরীরে
গুটি গুটি পায়ে
চৌকাঠ পেরোবে।

কৈশোর পেরোনো বিকেলে
লুকিয়ে মাঠে খেলা করা
বরষার ডুবে যাওয়া মাঠে
কাদামাখা আসরে
বন্ধুদের আড্ডায়
প্রতিনিয়ত ফিরে ফিরে
আসা তুমি দূরতমা
ভালেবাসায় আর কল্পনায়।
অসীম কল্পনায় তুমি সেই কিশোরী

হাত ছুঁয়ে দিয়ে গেলে.. ..

ইসস্‌ ইসস্‌ কত গপ্পো বানানো

গপ্পের ফাঁকে ফাঁকে
জ্বলন্ত সিগারেট

শেয়ারে শেয়ারে নিভে যাওয়া।

সব শেষে
সব ভাবনায়
তুমি বেশ কাছে ছিলে দূরতমা।

..
.. .. ..

ত্রিশ বছর পরে
এই মায়াবী সন্ধ্যায়
কিছুই নেই
নেই কোন জানালা
নেই কোন রোদ
নেই হাত; হাতছানি
নেই বিশ্বস্ত চোখ
চোখের স্থির চাহনি।
নেই খোলা মাঠ
নেই সেই কিশোরী।

কিছুই নেই;
সবকিছুই বদলে গেছে,
তবুও আছো তুমি দূরতমা।

মৌনব্রত

শব্দেরা মৌনতায় গেছে !!!

ধ্যানে মগ্ন এক দূরতমা
তাবৎ শব্দ লুকিয়ে রেখেছে
হৃদয়ের গভীরে
নিশ্বাসের পরতে পরতে।

মৌনতায় কমা স্তরে নিয়ে যায়
নিউরন ভেংগে ভেংগে অনুরা
শুধুই ভালোবেসে যায়।

ভালোবাসায় মৌনব্রত সব অনুভূতি
আমার যে কিছুই করার নাই।

শব্দেরা মৌনতায় গেছে
নিয়ে গেছে এক দূরতমা ।

ভালো থেকো এই আমি বিহীন

দূরতমা,
ভালো থেকো
দূর সীমানার কাছে
ভালো থেকো এই আমি বিহীন।

শরতের কাশফুল বিহীন
বসন্তের পলাশ বিহীন
ঝরা পাতার অরন্যের কাছাকাছি
ভালো থেকো তুমি।

উড়ে চলা আচঁল
ফেলে আসা চোখের জল
শির শির স্পর্শে মাতানো চুলে তুমি
শ্রান্ত মানুষের পথ চলা শেষে
ক্লান্ত বসতিতে আমি বিহীন।

নির্ঝর রাতের অদৃশ্য শূভ্রতায়
জোছনারা যতটা কাছে টানে
স্নিগ্ধতায় ততটা তোমায়
তার চেয়েও কাছে রেখো
তোমার নিজেরি হৃদয়।

তবুও ভালো থেকো
দূর একাকী বসতির কাছাকাছি
ভালো থেকো যেখানে আমি বিলীন।

দূরতমা : তুমি আজো আছো

দূরতমা,
তুমি এক দ্বীপে আছো,

যেখানে
আকাশের পশ্চিম দিগন্তে

গাংচিলেরা উড়ে যায়
সৈকতের খোলা প্রান্তরে
কাঁকড়ারা খেলা করে।

ভেঁজা বালুতে
ভেঁজা পায়ের ছাপ ।

তুমি আজো আছো
নিজের কষ্ট বুকে ধারন করে
সেই দূরতমা তটে
পৃথিবীর সব ভালো লাগা
ভালোবাসা
তুমি বিলাও সাগর জলে।

দূরতমা,
তুমি নিজে এত কষ্ট
ধারন করে আছো,
তবুও বিলাও অকাতরে
অন্য জীবনে; অন্য ভূবনে
নিজের মুগ্ধতা
নিজের ভালো লাগা
নিজের ভালোবাসা।

তুমি এত বুঝো
নিজেকেই বুঝো
না বুঝার মত করে
জলের গভীরে
মাথা পেতে রাখো,
দূরতম এক দ্বীপের কাছে।

দূরতমা তুমি আজো আছো
দূরতম এক দ্বীপে !!!!!

দৃষ্টান্তহীন

রঙধনুর রঙ্গে দিয়ে গেলাম দু’ফোঁটা জাম রঙ
অথচ বৃষ্টিবেলায় ঘামছিলো অনেকখানি পৌরুষ
নির্ভার হয়ে নিশ্চুপ যখন পৃথিবীর শৌর্য আর আনবিক যজ্ঞ
যতবার বলেছি
ততবার শুনেছি

শুনতেছি হাহকার নর-নারী সব লেলিহান দূরান্তে এক আলকাতরা পথে কালো রঙে মিশে গেলো বুলেটপ্রুফ যন্ত্রনা আত্মহননের মাদকতায়
কিংবা

দৃষ্টান্তহীন এক মানবীর দীঘল কালো চুলে ঝরে পড়া শীত

ঝরতেছে অনেক অনেক

যে ঘটনা ঘটতেছে ছায়ায় ছায়ায়
টুকরো টুকরো মাংসল হাতে মুখোশেরা
তুলে নিচ্ছে ক্যানভাসে ছড়ানো অবিকল গণতন্ত্র
মেখে মেখে গোলাপী পলেস্তারা পড়তেছে ঝরঝরে কুয়াশা অথচ কথা ছিলো নতুন সকাল উঠতেই কমলামাখা রোদে সে এসে নামবেই সামনের উঠোন জুড়ে

বিড়বিড় করি প্রতিবার.. ....

আকরিক অনুভূতি

সদর দরজায় তালাবদ্ধ,
তার হাতে চাবির গোছা।
দুইআংগুল; তালা চাবির স্পর্শ
তিনি একটা ধরছেন
স্পর্শ পাছ্ছেন; ছেড়ে দিছ্ছেন।

শেষে সেই চেনা অবয়েবে
হাতের স্পর্শ
সদর দরজা তালাবব্ধ
তিনি প্রতি রাতে আকরিক অনুভূতি
নিজেকে সুদৃঢ় করেন!

ঘৃনারা বেকে যায়

ঘৃনারা জেগে উঠে
কিঞ্চিত বেঁকে যায়
ভালোবাসার নিরক্ষ রেখা।

সাবলীল ক্রোধ সিড়ি বেয়ে উঠে আসে
হরহামেশা বৃষ্টির ফোটা ছাদের কার্নিশে।

শিশু খেলা করে; জলকেলী
উদোম মগ্নতায় ভিজতে থাকে
মায়া মমতায় ভিজতে থাকে
মায়া মমতার কার্নিশ।

প্রপঞ্চ নির্জনতায় ঝড় উঠে
বায়বীয় সঞ্চালনে বিদ্যুৎ

ঘৃনারা বেকে যেতে থাকে
নিরক্ষ রেখা ধরে।

এক পা
দু পা

শিশুরা নামতে থাকে

বৃষ্টির মিতালীতে!

তুমি তো ভিজছো নন্দিতা

বেশ কিছুদিন আগের কথা নয়।

এই তো সেদিনও
মেঘ ঘনালেই
আমি বৃষ্টি ফোঁটা অনুভব করতাম।
শব্দ শুনতাম টিনের চালে,
রাস্তায় ডুবে যাওয়া জবুথবু কাক
ঐন্দ্রিলা দেখতাম তোমাতেই।

অপরিকল্পিত ইট বালির স্তুপ
আর সুরম্য ডুপ্লেক্স দেখতাম,
এক হাটু পানিতে পা ডোবাতাম
রেইনকোট আর খোলা শার্ট ভেজাতাম
বড় নালা আর ছোট নালার মিলন দেখতাম
উল্লাস দেখতাম; ডুবে যাওয়া খরকুটোও।

আজ বাইশে শ্রাবন
অথচ বৃষ্টি নেই
ফুটপাত খটখটে
ভেজা আচল নেই
নেই অষ্টাদশী; জবুথবু তুমি।

আবহাওয়া বিভাগে রেকডকৃত
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দশ মিমি,
বেশ তো; কম কি?

তুমি তো ভিজছো নন্দিতা।

নদীর চোখে মানুষের অশ্রুজল

দুপুরের সুর্যেরা
প্রিজম থেকে ছিটকে পড়ে
আলোয় বদলানো আলেয়ায়।

এক মানুষের চোখে নদীর জল ।

নদীরা বাঁক নেয়
আড়াআড়ি আলোর গভীরে
অলস দুপুর যতটা অপসৃয়মার
ততটায় এক নদী নিজেই
এক মানুষ হতে থাকে।

কে সে ?
বিকেলের প্রতিবিম্বতায়
এক নদী
অন্য মানুষের কুহেলিকায়।

গোধূলী যতটা পশ্চিমাকাশে
এক নদীর চোখে মানুষের অশ্রুজল।

ক্রান্তিকাল

মোমেরা গলে পড়ে
উধাও স্বপ্নবীজে এক কিশোর
হাটা পথ পাড় করে
আগুন আভায়।

হাত নেই; তবুও হাতছানি।

প্রতি ফোটা আলোয়
নদী ফুলে ফেঁপে উঠে,
এক মাঝি
নৌ পথে পথ খুঁজে
তরল কায়ায়।

বর্ষা নেই; তবু বর্ষাতি।

পানির পতনে পতনে
বাড়ির আংগিনা স্নাত
এক যুবতী
যৌবন হারাতে থাকে
নিস্তব্ধ ছায়ায়।

রাতহীন; তবুও নক্ষত্রেরা জ্বলে উঠে।

আঁধার অনুসন্ধানে
আকাশের প্রতিটি দ্রাঘিমা
এক গ্রহ
আলোর দিশা খুঁজে পেতে চায়
নিশ্চিহ্ন অক্ষরেখায়।

বার্ষিক গতি

অন্তরংগ সময়ের প্রবাহ
একটি দৃশ্যমান তারিখ
বছরের অপসৃয়মান আহ্নিক গতি

বিভৎস হতে বিভৎসতম
কালো গহবরে নির্বিষ গমনেচ্ছায়।

ধাবমান অন্তর থেকে
উল্কাপিন্ড নেমে আসে সুমেরু বৃত্তে।

যৌথ সবকিছু ভাংতে থাকে
যথার্থ একটি বাহ্যিক পললস্তর

পৃথিবীর প্রতিটি দিন শেষে
আগ্নেয় ভালোবাসায় লাভার স্রোত নামে

মৃত মানুষ সারিবদ্ধ শব্দে ঘূর্নয়মান

অথচ আমরা জানি
শুধুই একটি বার্ষিক গতি !

আয়ু

একটা একটা করে বাতিগুলো নিভতে থাকে
দেয়ালগুলো আস্তর খসায়
সরীসৃপের চামড়া বদল,
গুটি বসন্ত এগিয়ে আসে
খোলা জানালায় রডেরা বেকে যেতে থাকে।

বাকানো রড
একটি হাত হয়,
প্রতিবন্ধী হাত ক্ষয়ে ক্ষয়ে
মরচে ধরা অনুভূতি।

অনুভূতি, বেমালুম গ্রাস
ক্রমশঃ বিভাজিত।

ছাদ ধীরে ধীরে নেমে আসে
প্রতিফুট অন্তর

একটা মানুষ মাটির কাছে
মিশে যেতে থাকে।

দেয়াল পিঠে ঠেকে
পৃথিবীর ছাদ মাথায়,
হাতেরা অবশ হয়

পঞ্চান্ন বছরে একটি বিকেল

আজ শেষ দিন।

তোমার দুচোখে অপার বিস্ময়!

ভূমধ্যসাগরীয় ঘ্রাণ নিয়ে দুলেছিল তোমার কেশবন্ধনী,
কেশরাজির কথা নাইবা বলা হলো
সরু রেখাগুলি আঁকা হয়েছিল নাবিকের হাতে।

-স্তিমিত জ্যামিতিরা আয়তনে রুপকথা।

আয়ত লাবণ্যে দুচোখ মেলে বনলতা আঁচল
ধূমায়িত কুয়াশারা রোজ পার হয়ে থাকে
অগোছালো বারান্দার পাশে বেড়ে উঠা অর্কিড

-জরায়িত জীর্নতা মেলে ডানা।

তাকালে তুমি, চলে গেলে এক্কারা
আবদ্ধ ব-দ্বীপভুমি জাগবে বলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট
এগুতে থাকে প্লাবনমৃত্তিকায়

-চিরায়ত স্বপ্নেরা সিফন উড়ায় ভাঁজে ভাঁজে
-দুচোখ মেলে অপার বিস্ময় !

ওরা আসবে।

কালো ছায়া গ্রাস করে টেবিলের চারপায়া
ক্ষনে ক্ষনে বাঁজছে দামামা
আমি চুপ বৈমাত্রেয় বিহঙ্গে
রেলক্রসিং ধরে হাটছে ধরিত্রীর অপকায়া।

ওরা আসবে বলেছিলো মার্চপাস্ট করে, থেমেছে পথিক। কেনাবেচা আজ নেই; পসরা গুটিয়েছে।
অসময়ে স্কুল ফেরত বালকের হাতে স্তব্ধ পেন্সিল। মায়েরা উঠোন ছাড়িয়ে দাড়িয়ে সদর দরজা ধরে।

ওরা আসবেই ভেংগে ভেংগে
ইস্পাতে মোড়া কফিন সাজিয়ে
কালো ছায়া গ্রাস করে
গ্রাস করে।

ত্রিমাত্রিক ছবির ব্যাকবোন

একটি রম্বস ক্রমশঃ
স্লাইডিং চোখে শববাহী যানগুলো
ছুঁয়ে গিয়ে কাদা মেখে বেরসিক,

-মনে পড়ে ”দ্যা লাঞ্চন” ।

বৃষ্টিরা খেলছে দাবাঘর
রোদেরা নেমেছে কোনাকুনি পাঁচিল অবধি,

তুলির আঁচড়ে কিস্তিমাত হতে
মলাটবদ্ধ হয়ে পড়ে চুয়ান্ন পাতা আর

ত্রিমাত্রিক ছবির ব্যাকবোন .. ..


খ .

একটি রম্বস ক্রমশঃ ...
স্লাইডিং চোখে শববাহী যানগুলো ছুঁয়ে গিয়ে
কাদা মেখে বেরসিক;
মনে পড়ে ’লাঞ্চন’

খেলছে রোদেরা বৃষ্টির
দাবাঘর
নেমেছে কোনাকুনি পাঁচিল অবধি......

তুলির আঁচড়ে কিস্তিমাত হতে হতে
মলাটবদ্ধ চুয়ান্ন পাতা
আর
ত্রিমাত্রিক ছবির ব্যাকবোন .. ..

কালো শাড়ী

ব্যবচ্ছেদে মেতেছে নাচন
অনাবিল এক প্রলোভন।

নিরব আবরনে দীর্ঘায়িত শাড়ির বারো হাত
নেমেছে স্লথপদে,
পদচ্যুত মৃত্তিকায় ঘেমেছে শ্বাপদেরা।

-গাঢ় অন্ধকারে তন্দ্রাচ্ছন্ন প্রেমিকারা

প্রভাতিকা এক ধূসর ক্ষনে
নোনা জল আজ পতনগামীতায়

অক্ষিযুগলের বক্রতায়
বিস্তৃত হাতের ছাপ বিরতি টেনেছে ক্রমাগত
কালো রং তুমি শাড়ী হলে . . .

শাড়ী


শুয়ে আছে শাড়ি
বিকেল জড়িয়ে
আলো-আধাঁরি ঘরে একাকী শাড়ী
র্নিবাক নম্রতায় এলিয়েছো নারী

বিশাল শুন্যতায় থেমে থেমে আমি জলছবি আঁকি।

খ.
শাড়ীরা আজকাল বেশ তন্দ্রাচ্ছন্ন ।

গুটানো পায়ের ছোট হয়ে আসা রেখাপথে
পৃথিবীটা স্বর্গ হয়ে পড়ে
অশরীরী ভর করে
ল্যাম্পপোস্ট একাকী দাড়িয়ে থাকে আলোহীন স্তব্ধতায়

স্তব্ধ
স্তব্ধতা
স্তব্ধতায়।


সাদা জমিনে ভেঁজা ভেঁজা সবুজ পাতা
লাল লাল আগুন আভা
ছড়ানো ডালে পাখির ছায়া
সোফাতে পড়ে থাকা
লেপ্টে থাকা শরীরসমেত
ধীরে ধীরে অবসন্ন হতে অবসন্নতায়
শাড়ী তুমি বেশ থাকো দুপুর গড়ালে একাকী মগ্নতায়

মগ্ন
মগ্নতা
মগ্নতায়।

ঘ.
জুম সমেত তোমাকে ধারন করেছি
খুলেছি সকল প্রচ্ছদ
অবিকল স্বপ্নের মতো

প্রতিবার একটা একটা দোয়েল নেমেছে তোমার বাড়ীর টিনের চালে
প্রতিবার শুকানো শাড়ী উড়েছে বাতাসে
প্রতিবার রংগুলো জমাট হয়েছে

রোদেরা আলতো হতেই নিষ্পাপ সম্বোধনে তুমি হেসেছো বিকেলজুড়ে।

লাগোয়া ছাদে নেমেছে হাইব্রিড শকুনেরা
নেমেছে মৃতপ্রায় কাক
ততবার উড়েছো আঁচলসমেত
খুলেছো বাঁধন

ঘুমন্ত বীজেরা জেগেছে প্রতিবার
শুধু ততবার
তুমি রয়ে গেছো র্নিভেজাল সফেদ শাড়ী ।

দৃশ্যতঃ আমি কিছুই দেখিনা

দৃশ্যতঃ আমি কিছুই দেখিনা
বাগানবিলাসী ঘাসেরা ছেঁটে ফেলি
অদৃশ্য পাথরের ধারালো হাতে র্নিবোধ কাঁচা আম।

আমাদেরি ভেঁজা সকাল ক্লোরোফাইড
স্বপ্নে
স্বপ্নে বিভোর
তাপময় মিনারেল ওয়াটারের অলবনাক্ত শরীর
বিসতৃত হতে থাকে বাষ্পীত দুপুর।

উড়ে যায়
একাকী
একাকী এক কাকের ডানা
মেলে যাওয়া তাদের
আমি দৃশ্যত দেখিনা
কোমল চোখের প্রশান্তি
একজন বেহালাবাদক হেটে যায় একজন বেহালায় সুর তোলে

হঠাৎ হেরে যায় একটি বটবৃক্ষ নেমে আসে পুকুর পাড়ে
হেলে যাওয়া কালবৈশাখী কাল হতেছে পুরুষেরা

ঘামছে অনবরত অনাবৃত বস্ত্রযুগল ।

ছাইরং কবুতরী

ছাইরং কবুতরী ভাবছি তোমাকে অনবরত
লাগোয়া বহুতল ছেড়ে যাওনি আপাতত কোথায়।

উড়ছো
উড়ে যাচ্ছো

যাচ্ছো না কোথাও পাঁকা দালান ছেড়ে

ফল্‌স স্ল্যাবগুলো মেখে নিচ্ছে তোমার রং
তুমি নিচ্ছো শুষে রড-সিমেন্টের মিশ্রন

একে
একে বিকেলের পতনেচ্ছুক ছায়ারা
ছাইরং কবুতরী ভাবছে তোমাকে
অনবরত
উলম্ব রেখায়

আজ মন খারাপ করতে নেই

জানো চন্দ্রিমা
সোজাসুজি নেমে আসা রোদে
আজ মন খারাপ করতে নেই।

আলোরা নামতেই ছেড়ে যাওয়া কষ্টেরা গতকাল
ঝড়ে পড়া আমের নেচে উঠা প্রলয়ে
মাটির কাছাকাছি দাড়িয়ে এক পদচিহ্ন বুকে নিয়ে ভালো লেগে যাবে
মৃদু মৃদু উড়ে যাওয়া বাসন্তী রংয়েরা
রঙ্গিন আলপনায় সেজে থাকা কবিতা ।

একাকী এই ঝলমলে দুপুর পেরিয়ে
স্বপ্নেরা অতীত হয়ে যাওয়ার আগেই
তুমি আসছো কি আমার বাড়ী
ঢলে পড়া বিকেল পেরোনোর আগে ?

খোলসবন্দী মানুষ

এ্যামোনিয়া গন্ধে রাস্তাটা বাঁক নেয়।

বাঁকেরা বকের কাছাকাছি এক হাটু জল খোঁজে
শ্রাবন শেষের ডুবে থাকা ধান ক্ষেতে।

তারা নেমে আসে বাঁধ ছেড়ে। অদূরে রাত জাগা সরীসৃপ ।
খোলস ছাড়ে ক্রমাগত গভীরতায়।

ত্রানের ঢেউটিন ভেসে ভেসে কূল খোঁজে।

কূলেরা খামার বাড়ী
হাতকড়া হাত নাড়ে দিন রাত
খোলসবন্দী মানুষেরা হাঁফ ছেড়ে বাচে।

তোমার সাথে জড়ানো আমার ছোট ছোট অনুভূতিগুলো


কচি ঘাসের উপর দিয়ে হাটা শুরু করতেই যান্ত্রিক আওয়াজ কানে এসে লাগতে লাগলো। যন্ত্রেরা কাঁদছে।

প্রিয় নন্দিনী তোমাকে দেখলাম প্রিয় দেবদারুর পাশে দাড়িয়ে। শাদা শাড়ী বাসন্তী পাড়ে। বাতাসে উড়ছে অনেকখানি আঁচল।

উড়ছোই যখন বিনদাস উড়তে থাকো। বেমালুম হয়ে যাও অশরীরী।

অশরীরী, অবাক হলে ? অবাক হতে নেই যখন পুরোটা এলিয়ে আছো। এলিয়ে দেয়া তনু বাঁকে বাঁকে কেঁপে উঠছে। কাঁপছে ইথার তরঙ্গ । হেটে চলা মাইক।

অন্য ফুটপাতে বাদ্যযন্ত্রেরা মিছিলে মিছিলে মুখরিত। তুমি দাড়িয়ে । সমাগত জনতা ভিড় জমিয়েছে জারুল গাছের ছায়ায়।

জারুল গাছ বেশ এলোমেলো হয়ে আছে মেহগনি প্রচ্ছদে। প্রচলিত সব রং আছে তবুও দেহহীন কবুতর। কবুতরেরা ছড়ানো ধানের ক্ষেতে নিজেরা খোশগল্পে।

হাটছে এক র্ফালং পদ চিহ্ন । প্রতিটি পদে একটা একটা তৈলচিত্র। আলতা রং ছুঁয়ে সম্ভ্রমে সিক্ত। হাটুরা ডুবছে অনাবাদী বুকে।



আজ ভাবছি রোড ম্যাপ এঁকে দেব আল ধরে। আলেরা যখন ফুটপাত ছোঁয়। ফুটপাত যখন সমান্তরাল হয়ে যায় পিচঢালা সড়ক ধরে। সাঁই সাঁই করে ছুটে যায় যান্ত্রিক পা গুলো।

যে নদীটার কথা বলেছিলে, তার তীর ঘেষে একটা সাইডওয়ে চলে গেছে খামারবাড়ী। এই বাড়ির আঙ্গিনায় অনেকগুলি ফলের গাছ। তুমি জামরুলের কথা বলতে। মাঝে মাঝে জলপাই রং এর কথা । সেখানেই বিশাল একটি জলপাই গাছ ডানা মেলে আছে।

তুমি চাইতে খামারবাড়ী। আমি চাইতাম সফেদ বাড়ি। বিস্তর ব্যবধান ছিলো রংয়ে।

আমার উঠোনে একটা কামিনী ছিলো। তোমার ছাদের রেলিং ঘেষে আমাজান অর্কিড । আমি একটি শাল বন চেয়েছিলাম। হাস্নাহেনা আর সেগুন ছায়া বেশ চাইতাম। তুমি লাগোয়া ওয়াইড স্ক্রিন।

কোনার ঐদিকে একটা নারকেল গাছ ছিলো। ঝড়ের রাতে ডালেরা নড়ে উঠতেই লেপ্টে যেতো স্লিপিং গাউন। মনে হতো আলেরা মাটির বুক চিড়ে অদৃশ্য । সীমাহান দৃষ্টিতে একাকার বিছানো বেডশীটগুলো কাঁপছে।


গতবছর থার্টিফাস্টে একত্রিশটা বাজনার ঝড় তুলেছিলে তোমার কোমল লনে। বাজনারা উম্মাতাল ছিলো। ছড়ানো কাঁচের শিশিগুলো দেয়ালে ঠায়।

কেবিনেটে তোলা হলো তালা ভাংগা রাত। রাতেরা লোকাট হতেছিলো গভীরতর স্বাদে। ঘেমে ঘেমে ঘামছি আর্দ্রতা আর বেশুমার বায়বীয়তায়। ক্যাটওয়াক সেরে সিনোরিটা তুমি দাপিয়ে বেড়িয়েছিলে এক পাতা আলিঙ্গনে। আলিঙ্গনে রংধনু কেলভিন শার্টের কাঁধ।

দাড়ানো ইয়ার্ড ল্যাম্প। আমি ও দাড়ানো । ডেকেছিলাম ইশারায়। এসেছো শেষ রাতে। ধীরে ধীরে নেমে আসা সিফনেরা মাটি ছুতেই।

ওহ ডার্লিং, তুমি একা একা করছোটা কি? চলো না। দেখোনা সবাই কত্তো মজা করছে। কাম অন বলতেই জড়িয়ে আমার বুক। থেমে গেলে নিস্তব্ধ সমর্পনে।

আমি শুনছি। ক্রমাগত শুনছি । উঠছেই আর নামছেই। সিসমোগ্রাফে ক্রমাগত দুলুনির রেখা । ধক ধক করে বাঁজছে বাজনারা বুকের মাঝে।



সকাল সাতটা। আড়মোড়া ভাংলো আলতো কিশোরী আলোরা । নেমে আসতো সাইড টেবিল অবধি।

আর ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে আটটা হতেই একটা আরশোলা হেটে গেলো কিচেনের দিকে। কিচেনটা বেশ গুনগুন করছে আজকাল। রেশমী চাঁদরে ঢেকে আছো হয়তো তুমি।

শরীরটা লেগে আছে রেশমের সাথে। তুমি হয়ে আছো রেশম পোকা। সিল্ক ওয়ার্ম এই নামে বেশ মানায়। মনে পড়লো ওয়ার্ম বলতেই তুমি দৌড়ে পালাও। যে কোন দিকে।

গতবার একটা গুবরে পোকা ঢুকে পড়েছিলো জানালার ফাঁক দিয়ে। এরপর সারারাত একটা সরল রেখা হয়েছিলো তুমি যোগ আমি।

সমীকরনটা মাঝে মাঝে বেসুরো করে ফেলো। আমি খুব একটা অবাক হই না। হতে নেই। এই সকালটাকে নিয়ে বেশ ভয় যে। কখনো একটা যোগের সাথে আরেকটা বিয়োগ। কখনো সবকটি যোগ মিলে অসীমের দিকে ধাবমান। কখনো সবগুলি বিয়োগ। কখনো এমন কিছু সংকেত জুড়ে দাও আমি সমাধান নিয়ে ভাবতেই সংকোচ বোধ করি।

ডাইনিং টেবিলের পাশটা যতটা বাড়ে ততটা ছোট করে ফেলছি বাচনশৈলী।


বুকশেল্ফ চওড়া বুক অবধি ছিলো। দাড়ালে হাত দিয়ে নাগাল পেতাম অপ্সরা। অপবাদে লাঞ্ছিত হাত কাটা ব্লাউজ।

লাশকাটা ঘরে প্রায়শই তোমার কথা হতো। টুপ করে একটা বোতাম খসে পড়তেই পাবলোর কথা মনে হতো। প্রায়শই জীবন্ত মডেলগুলি পায়চারিরত।

শর্মী, তোমার মনে আছে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের কথা? কিংবা ফায়ারপ্লেস। আবদ্ধ বেডরুম থেকে কিচেন । কিচেনের খোলা সিংক। শাওয়ারে গুনগুন বিয়োন্স।

ষ্টেইনলেস ছুড়িগুলো বেমক্কায় কেটেছিলো তোমার অপরুপ অনামিকা। তুমি কেঁদেছিলে। রক্তেরা ফোঁটাগুলো দেখে লাশকাটা ঘরের কথা মনে পড়েছিলো।

ফ্যাসিনেটেড লালরঙ দেখে তুমি হেলুসিনেশানে ভুগতে। সান্ধ্যরাতের মাদকতায় খোলা বই ডিভানজুড়ে ছড়ানো দেখে কেঁপে উঠতো কিছু অলিখিত পদাবলী।

আমি তর তর করে ঘেমে গেলে বলতে আর্দ্রতা কেন তোমাকে ছোঁয়না।


নীল রং নিয়ে তোমার বেশ আক্ষেপ ছিলো। কেন সব রং নীল হয় না। লাল লিপস্টিক প্রায়ই তোমার বিরাগভাজন হতো। শপিং মলে গেলে এড়িয়ে যেতে।

ফ্রেশনারগুলো সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকতো তোমার শাওয়ার এর ভিস্যুয়াল সাক্ষী হিসেবে। সারিবদ্ধ লরেলের কৌটোগুলো ঘেমে যেতো।

দেয়ালে এঁকে যাওয়া ফেনিল সৌরভে তুমি ঝরতে। একটা একটা মুক্তো বিছানো টাইলসগুলো নীল হতো গভীর বেদনায়। অ-পাওয়া অনুভূতিতে বৃষ্টির ফোঁটা নামতো তোমার দেহ গড়িয়ে।

টাওয়েল জড়ানো টাওয়েলিকা । আমি তাই বলতাম টাওয়েল মানবী । কখনো টাওয়েলিকা। খোলাচুল। টুপ টাপ দু’এক ফোঁটা পড়ে যাওয়া মাটিতে।

লাল মখমলে মিশে যেতো তোমার স্পর্শ।

ছ.
বৃষ্টি নিয়ে আমাদের দুজনের একটা মিল ছিলো। টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দ। ঝুম ঝুম বৃষ্টিতে ইচ্ছে করে ভেঁজা। আলুথালু আঁচলেরা লেপ্টানো বইয়ের পাতায় । শুকনো ফুলেরা যেমন তেমনি বহুকাল ।

প্রথম শীতে এক বিকেলে আমাদের ছাদে ফোঁটা একটা লাল গোলাপ তোমাকে দিয়েছিলাম । সেই গোলাপ পাপড়ি রেখে দিয়েছিলে ময়ুরাক্ষীর পাতায়। সেটা আজো সেখানেই আছে। যতবার উল্টাই ততবার মনে পড়ে ।

বর্ষার তুমুল বৃষ্টি কিংবা বৈশাখীর শিলাবৃষ্টি যখনি তোমার কথা মনে পড়ে বুক শেল্ফ খুলে বসি। খুঁজে নেই ময়ুরাক্ষী আর সেই গোলাপ পাপড়ি।

মনে পড়ে ছোট ছোট ক্ষন। তোমাকে নিয়ে আমার অনুভুতিগুলো।

আর জানতে ইচ্ছে হয়, কেমন আছো তুমি আমিবিহীন।

প্রতিফলিত ছায়া

রেগে আছে উপর নিচ সামন্তরিক ক্রোধেরা
জ্বলে উঠছে লাভার আগুনে লাল
রংয়েরা শাড়ীরা
বাতাসে উড়তেই কালোরা ডুবে যায়
এক হাটু করতোয়া পাড়ে পারদেরা
তাপদাহের ঝর্নাধারায়

অবচেতন
শুন্যতায়
ক্রমশঃ একটা চোখ বেয়ে নামছে
পুড়ে যাওয়া ত্বকের মসৃনতায়।

প্রতিফলিত ছায়ারা
তোমরা কি আজ সকালের রোদ দেখেছো ?

স্নান

খুলে ফেলছে কোষে কোষে পাতাবাহার রঙ্গিন
অসহযোগে নামছে ধীরে ধীরে কাঠবেড়ালীর দল।

নামছেই
নামতেই খুলছে বাকল
বাকলেরা পাখি হয়ে উড়ে গেলে
টিনের চাল
ঝরা পাতারা থেমে থাকে ঘুমন্ত ছায়ায়।

ওষধি নিমের ছায়ায় পড়ে থাকে নারকেল পাতা
পাতারা শুষে নিতে থাকে মধ্য দুপুরের পুকুর
পানিরা মাছ
মাছেরা হাটতে থাকে পাড়ের কিনার।

ভেংগে ফেলছো বাধন সকল গিঁটের
সুতোরা আলগা হতেই পাড় ভেংগে নামছো তুমি
পানির গভীরতর হতেই
ঝুঁটি বেধে আসা মাছরাঙ্গার দল
সারিবদ্ধ বিকেল
তুমিরা ডুবে যেতে থাকে অনাবিল।

দজলার তীর

পৃথিবীটা প্রশ্ন করছে ছয়শকোটি আদিম অনুভবে
সোনালী রক্তে প্লাবিত দজলার তীর আর কতদূর ??

তুমিহীন

নেমে যাই বিস্তর মাটির নীচে তোমাকে ছুঁতে
যতটা অবগাহনে প্রিয়া তুমি পিয়াসী হতে।

মাটিরা দেবে গেলে
তুমি আসবে বলেছিলে
পানিরা ডুবে গেলে
তুমি হাসবে বলেছিলে।

কত রাত বিনিদ্র কেটেছে
প্রতি রাত শেষে মনে এঁকেছে
স্বপ্নেরা রাত দিন
একাকী তুমিহীন।

তুমিহীন
তুমিহীন
তুমিহীন
নেমে যাই বিস্তর মাটির নীচে তোমাকে ছুঁতে
নিজের মাখে নিই

বিলীন
বিলীন
বিলীন।

ভাগ্যরেখা

ভেংগে যাচ্ছে আয়না।
আয় আয়
না না

আসবে না সে বলে গেছে যাবার আগে
জানা ছিলো অজানায় হয়তো
পড়ন্ত টেবিলল্যাম্প পড়বেই।

মাটিতে হস্তরেখারা ত্রস্ততায় আঁকছে ভাগ্য রেখা।

ধূসর চোখ

ধূসর চোখগুলো দেখে দেখে আছে পৃথিবীর মরূভুমি
জীবন্ত আলোরা কচিৎ গ্রীবালগ্ন
প্রদক্ষিনরত চোখময় নীল মাছগুলো বেঁচে আছে

ইথার তরঙ্গে কেঁপে কেঁপে আছে পৃথিবীর জলাভুমি
মৃত শব্দেরা নিরলস বাহুবন্ধনে
পথহাটা পথিকেরা ফরমালিন মিশ্রিত হয়ে হয়ে
দিন গুণছে সমীকরন
+
বিষন্ন আই-শ্যাডোগুলো নড়ছে অনবরত।

আশা-নিরাশায়

(বিষাদ + তুমি) > গতকাল = মধ্যবিত্ত + আশা-নিরাশা

চালেরা কাঁকড় বেছে করেছে পার
কয়েক দুপুর, আগুনেরা হেটেছে আরো।

আশা-নিরাশায় দুলছে শোবার ঘর

কাঠেরা ভাসমান

সামনের কাঠের টেবিল > পেছনের দরোজা

কাঠেরা সিজনড হতে থাকে খরস্রোতা নদীর বুকে
নদীরা ছুঁয়ে যায় সদর দরোজা।

কাঠেরা শুণ্যতায় ভাসমান

গোলক ধাঁধা

গোলক ধাঁধায়



একটা অংক কষেছি।

সমাধান: পনের কোটি মানুষের একটি করে কষেরুকা আছে।

ভিন্নতা

ঘোড়দৌড়ের ফিনিশিং পয়েন্টে টানা হলো আন্তজার্তিক তারিখ রেখা।

লগ্‌ড অন হতেই
আমার এখানে বেলা বারোটা
তুমার রিস্টওয়াচে গভীর রাত।

মনেরা ভিন্ন হতে থাকে সুগভীর মারিয়ানার কাছে এসে
এই সুনামী এলো বলে দূরদ্বীপবাসিনী তুমি লগ্‌ড আউট।

অতীব গাঢ়

এক কাপ কফি দুধ রংয়ে গাঢ়। অতীব গাঢ়।

লিপস্টিক ছোঁয়াতেই শার্টের কলার হাওয়াই আল্পনা,

১ টু ১০

ভয় কি “সার্ফ এক্সেল হ্যায় না”।

একটি পললভুমির কথা

সন্ধ্যা হলেই
অনেকগুলো আধাঁর একসাথে এসে থামে ।

বিরক্ত হতেছে পৃথিবীর পর্বত এবং নদীগুলো
ক্ষিপ্ত হতেছে সবুজ মাঠ এবং ঘাস
তবুও কালবৈশাখী ঝড় এলে

যতবার বুকের ভেতর ক্ষরন হতে থাকে; বাড়তেই থাকে শকর্রা

হ্রাসমান ক্রিয়ায় কাঠামো নড়ে উঠে ; শব্দে

ক্রন্দনে

অনেকটা বছর পেরোনো
খাদ্য আধার হতে বিকিকিনি শেষে অমায়িক সারল্যে
ধীরে ধীরে বয়ে যাওয়া
ঝর্না শুকায়

অসহায় চোখ ; কাঁদে তৃষ্ণায়
খরস্রোতা নদীর শব্দে সন্ধ্যা বাতি জলে, ম্যানগ্রোভে কাঁকড়ার ঝাঁক

-একদিন সব মৃত্তিকায় কাদা হবে ; নোনা জল মিশে যাবে

এই লেখাটি এখানেও পাবেন =>

বাড়ী ফেরা

ষ্ট্যাম্প ভেংগে তছনছ হতেই নেমে এলো বৃষ্টি।

ঐ যাচ্ছে

খ্যাতিমান খোলস ছেড়ে

যাচ্ছেই

বৃষ্টির ফোঁটা ভাংতেই উঠে এলো তর্জনী

বাছাধন এবার বাড়ী যাও।

শুষে নিচ্ছি

বেগুনী রংয়ে
আকাশীর শাড়ী ধরে প্রশস্থ পাড়
জলরং জলাধারে ডুবে আছে কমলার নগ্ন বাহু

প্রতিটি কোয়ায় টস টসে রস শুষে নিচ্ছি আর ভিজেছে নদীর বুক।

পেশীবহুল টিস্যু

পেশীবহুল টিস্যু পেপার ভগ্নাংশে <>





সাইলেন্সার বিঁধে গেলে রক্তের ফোঁয়ারা ছুটে
লাল লাল


হাসপাতালের বেড ছুঁয়ে চুপসে যাচ্ছে ক্রমাগত

কবিতার কেমিস্ট্রি

চুপ !

আজ দেয়ালিকা কথা বলে। আজকের বিজ্ঞসভায় কাগজেরা সফেদ রংয়ের । কলমেরা মনোযোগী শ্রোতা।

কোন কথা নেই। দুই পেগ গড়তেই জাজিমেরা নড়ে চড়ে বসে। ভাবছে আজ কবিতার কেমিস্ট্রি পড়া হবে।

রাত গভীর হতেই সুতোরা মাটি ছোঁবে। নহর বয়ে যাবে ।

নহরের পথে পথে কবিতার নিরক্ষরেখায় দুলবে পৃথিবীর পললভুমি।

নদীরা গুণিতক

এক ফোঁটা + অনেক ফোঁটা = এক নদী জল

মোনালিসা কাঁদছে ভেবে
শুণ্যে যোগ করেছি কালো মেঘ ।

নদীরা গুণিতক

সবুজ বেড়াল

একদিন বলেছিলে আসবে নবরুপা হাতে। অথচ নবান্ন চলে যায় ধীরে ধীরে রুপেরা ভিন্ন রাগে। সালোকিত কাঁচ সবুজ হতে হতে সন্ধ্যায় গেলতে থাকে কার্বন-ডাই-অক্স্রাইড।

পেয়ারা গাছটা অসময়ে বেড়ে উঠে। প্রিয় দোয়েল লেজ নাড়তেই হেটে এলো আধ-পোষা বেড়াল। বেড়ালের লোমশ শরীরে কাঁচেরা সবুজ ।

একদিন রাত গভীর হতেই ফোন করে জানান দিয়েছিলে এখনও অনেক বাকি। মলিন হওয়া আমার পেন-ড্রাইভে একটা কবিতা বাড়তে থাকে। দেয়ালে সেঁটে দেই চুইং গাম আর কবিতা।

ফিরে তাকানো একটা চোখের আড়ালে থাইরোয়েড উত্তেজনা। মাঝ বরাবর অনায়াস কম্পন নামতেই গোধূলী অন্ধকার ক্যানভাসে এঁকে যায় অন্য কিছু।

সিড়ির ধাপে হাইহিল স্পন্দনে প্রাণ পাওয়া প্রতিটি ধাপে শিহরিত নিরেট পাথর। অনভ্যস্ত দাঁতে চিবোতে থাকা চুইং বাবলে বুঁদ হয়ে থাকা ফরমালিন জীবনবোধে ক্ষয়ীষ্ণু চৌকাঠ।

সবুজ বেড়াল কখনো কি দেখেছো?

আমি তোমাকে দেখেছি। মধ্যমায় সোনালী চ্ছটা আর মেহদী।

তুমি ছুঁতেই স্লাইডিং ডোরে সবুজ কাঁচগুলো একটা বোধ হয়ে যায়।

তুম পাস আউ আগার

কিয়্যা কাহুন যাজবাত সামাঝতে হুয়ে
তুম পাস আউ আগার
রুকা হুয়া ফিজা যায়সে
বেরুখ সামান্দার কে লাহরে লায়ে হুয়ে।

ফিকি রাত পার হো যায়ে
সারে গুলশান মাহাকতি হুয়ি
ওয়াপাশ লাউট গ্যায়ে
ওহ আয়সে মাহির হামপে
চুপ হুয়ে যায়সে।

তুম আতি রাহতি হো
তুম যাতি রাহতি হো।

এক জুগনু জ্বালতি রাহতি হ্যায়।

Thursday, April 3, 2008

গতরাতের বাগান বিলাস

মাহজাবিন তুম এতনা না টুট যাওকে
ম্যায় ভুল যাও তুমি কেঁদেছো গত রাত।

চুপিসারে থেমেছ বাগান বিলাস
বিলাসী রাতের লাজাওয়াব পালে
ঘাসেরা গা বেয়ে উঠেছে পাঁচিল অবধি
ছড়ানো কামিনী ডালের মোহে থেমে থেমে।

তুম টুট না যাও বেগায়্যার
কোয়্যি রিসতা আজনাবী হতে হতে
ক্যায়ামাতকে এনতেজার ম্যায়তো কাভি ভি নাহি কিয়্যা
তুম না করো আয়সা কুছ,
নাজনীন তোমহারে হাতোকে রেখায়ে বেগাওয়া হো যায় ।

সকাল আসতেই জড়ো হওয়া কুয়াশারা ভেদ করে দেয়াল
দেয়ালের ফাঁকে ফাঁকে ঘনো ফিজা আর
তুমি হাটছো রেইল লাইনের ট্র্যাক ধরে
কাঁদছে স্লিপার আর নুড়ি
মায়ুস সূর্য একাকী ।

আমি আছি দাড়িয়ে একেলা তুমহারে পায়েল শুনবো বলে।

মৌরী

মৌরী চমকে যাই আমি,
তোমার ডান হাতের মধ্যমায় একটা আংটির বিচ্ছুরনে।

আংটিটা কথা বলে, ইশারায় ডাকে
আমি বুঝি তোমার চোখ, চোখের পাতায় নড়ে যাওয়া শেষ কথা।

সাবধান হে জনতা

উড়ছে চিলেরা কাকের পাশাপাশি,
সাবধান হে জনতা !

ওরা প্রিয় গণতন্ত্র ছোঁ মেড়ে
উড়াল দেবে অজানা আকাশে।

কাঁচেরা কেমন আছে ?

কাঁচেরা কেমন আছে?

ভেংগে যাওয়া গ্লাসে যতগুলো পানি জমা করা ছিলো
সেগুলিকে গুণিতক হারে কষে নিয়ে বলেছিলাম

ওরা বেশ ভালো আছে
কয়েক টুকরো অনুতে মিশে
যেভাবে লাভারা গা বেয়ে নেমেছে
সেভাবেই আছে।

কাঁচেরা মোল্ডেড সোনাগুলোয় গলেছে

শর্মী তুমি তিনটায় ফেরো রোজ বাড়ী

শর্মী তুমি তিনটায় ফেরো রোজ বাড়ী।

বাড়িতে খেলা করা সফেদ শব্দগুলো অবসন্নতায়
প্রাণ পেতো দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা অবধি
ধরে রাখা অনামিকা কড়ায়
সোনালী চমকে আঙ্গুলেরা হেলে দুলে এঁকে নিত
অমোহ অনেক শব্দ
তুমি কাছে থাকতে হাতল ধরে
হাতলেরা কাছে মেলে দিত গভীরতর রেখা।

কাছে আসতেই নিজ মনে বলতাম
এক্সট্রিম বিউটি !

তুমি নিজ মনে হেসে উঠতেই
অধরা কাঠামোতে শুরু হতো
অসময়ে বিদায়ের বাঁশি।

শর্মী তুমি তিনটায় ফেরো রোজ বাড়ী

আজ ফেরো নি। গতকালও না। কয়েক সপ্তাহ জানি না।
হিসেব করিনি।

মিস ইউ টু মাচ জেগে উঠা মনেরা
অপেক্ষায় থাকা কড়া রোদে চকমকি পাথর ঘষে দিয়ে
আগুন ধরায় জানালার পর্দায়।

রোদের মেলে ধরা বাতাসে পারফিউমড সন্ধ্যা অবধি
মিস করে আছে ইউ টার্ন করা তোমার লেফট আর্ম।

দুপুর দুটো হতেই ঘড়ির কাঁটারা স্লথ হতে থাকে
কোনকালে পেরোবে সেকেন্ডগুলো

ভাবছি বসে বসে .. .. ..যেখানে আমার সফেদ বাড়ির ছাদে শুন্য চেয়ার বসে আছে

প্রলম্বিত আকাশের বদলে যাওয়ায়।

-শর্মী তুমি অনেকদিন বাড়ী ফেরো নি

ব্ল্যাকআউট

রাতের অন্ধকারে পৃথিবীর আগুনগুলো নেমে যেতে থাকে মাটির উপর
ঝলসানো মাছ বার্বিকিউ হচ্ছে বলে।

আরেকটা এঞ্জেল ফিস এবার।

বার বার কিউ ধরে দাড়ানো ভালো লাগেনি ওদের
সাগরের নীল জল ছেড়ে ধূসর সৈকতে আছড়ে পড়েছে প্রতিবার

অযথা বিনিদ্র রাতের শেকড়ে
আগুন আভায় পৃথক হতে থাকে ব্ল্যাকআউট কোলাহলে ।

কাঁচ এবং


কতটুকু আলো হলো অন্ধকার আছে বলি। কতটুকু নয়।
দেয়ালেরা বাধাগ্রস' হলে কিংবা
যখনি আমি একটা কাঁচের প্রচ্ছদ হয়ে
মনোলোভা এক মানবীর কপালে এঁকে দেই
আরো আলো।


ধীরে ধীরে
একটা কাঁচ হেঁটে আসে নিভে যাওয়া অন্ধকারের কাছে।
কাছ থেকে কাঁচ। অপসৃয়মান আলো ভেদ করে যায়। আলোরা আরো চায়।

বিকেল আসে
ওদের হাতে রুপালী তলোয়ার
বিঁধে যাওয়া আগুনের ঘনঘটায়

একটা কাঁচ আর কাঁচা মাংসের রন্ধনশালা ।


ছয় দশমিক ছয় মাত্রায় একটা কম্পন
একটা রেখা দ্রুত চলে গেলো গ্রাফ চিঁড়ে।

জানালার কাঁচ নামাই
বাইরের পৃথিবীতে নিরেট অন্ধকার।

আলগোছে নেমে আসে ছাদেরা
বাদিকের রাস্তায় একটা হাত। হাতের পাশে পা।

শব্দ করে শবেরা হেটে যায়
নৈশব্দের হাতছানি থেমে থেমে
একটা কাঁচের টুকরো পড়ে আছে
আমার মেঝের কোনেতে
লাল মখমল ছুঁয়ে।

সুবাহ

একটা সকাল হবে বলে
সকালের বাতাসেরা লেগে থাকা
নিশ্বাসে জড়ো হয়,
বেজাড় সংখ্যারা জোড়া লেগে যেতে থাকে
জোড়ালাগা আয়নায়
মাহফুজ প্রচ্ছদের প্রতিবিম্বতায়
কাটাকাটি হতে থাকে আমার মুখাবয়ব।

”তুঝকো দেখা নাহি মাহসুস কিয়্যা হ্যায় ম্যায়নে”
ইয়ে পাল তুম আয়সে না আওযায়সে



ত্রিমাত্রিক রংয়েরা কালো হওয়া পর্দায়
আঁকা হতেই বৃষ্টি নেমে এলো
মসৃন পিঠ বেয়ে।

আউর কুছ ভি নাহি
নাহি হ্যায় লেকিন
ফিরভি
ওয়াপাশ পালাট লাও আপনে দাস্তান
ইয়ে লামহে বেকারার হ্যায়।

ইয়ে সুবাহ সুবাহ নাহি
মাহফুজ নাজরোন সে


অনুকম্পায় কেঁপে উঠে পাঁজর
ধীরে ধীরে
উধাও রক্তিম নগরীর বোলচাল।

শেষ রাত্রির কবর

ভাবের কথা বলে ভাবহীন অব্যয়ে অবয়ব হারায়
সান্ধ্যরাতের মেহগনি কপাট।

বৃত্তাঙ্কন জমেছিল বেশ যতটাই ছায়াপথে
অপছায়া নেমেছিল গভীরতর এক শুন্যতায়।

কাটাকুটি খেলা খেলে যাওয়া
নিধিরাম মেঘেরা উড়াল দিতে দিতে
এক অবসন্ন রাতে
রকমারি কথকতায় ভেঁজায় রাউন্ড টেবিল।

রাত বাড়তেই ওপাশের দেয়ালেরা কবিতার
হয়ে যায়

আর

দূর কোন এক সিমেট্রিতে খোড়া হতে থাকে শেষ রাত্রির কবর।

আজকাল

”কেমন আছিস ?” জিজ্ঞেস করেছিল এক সুজন।

বলেছিলাম
”সবকিছুতেই মরচে ধরে আছে।”

বলা হয় নি আজকাল
আমার ছাদের মরিচ গাছগুলো তর তর করে বেড়ে উঠছে
আমার জানালার রডকণা ঝরঝর করে মাটিতে পড়ছে।
মাঝে মাঝে
আমার পৃথিবী বেশ বিকর্ষিত কিংবা
অচল মাধ্যাকর্ষনে
আমার মানবিক ক্ষিধেগুলো
আজকাল মাটিতে পড়তেই মিশে যায় না বালুর সাথে।

আমি একটি সফেদ বাড়ি খুঁজছি

আমি একটি সফেদ বাড়ি খুঁজছি।
নিম গাছের জড়ানো ডাল আর মেহদীর রংহীন নয়
ঝুলানো টবের অর্কিড মাটি ছোঁয়
এমন বারান্দার মেঝেতে হাত দিয়ে

বহুদিন ধরে সফেদার ডাল গুলি অবহেলায় পড়ে আছে
গ্রীষ্মের দুপুরে তাপময় টিনের চালে নেমে আসা দোয়েল
অদৃশ্য বাসিন্দার হেলানো চেয়ারে
জেগে থাকা বইয়ের পাতায়
ক্লান্ত ছায়ার লুটানো কায়ায়
আমি একটি সফেদ বাড়ি খুঁজছি ।

সফেদ মানে শুধুই সফেদ।

মরুশেয়ালের অসমাপ্ত যাত্রা

দেখতে দেখতেই লাল সবকিছু ধূসর হয়ে গেলো।

গতকাল বিকেলে একদল অবসন্ন কাঠঠোকরা
অমলিন চোখে কেটে নিলো বাকল।
বাকলেরা লাল মাংসে ডুবে যেতে যেতে
আঠালো হয়ে এলো।

দেখতে দেখতেই পতিত কাঠেরা ফসিল হয়ে গেলো।

আমি পললভুমি খুঁজছি যখন
অরণ্য চলে গেলো।
চলে যাওয়া পথে বিস্তীর্ন মরু। বালিয়াড়ি আর ফণিমনসার ঝোঁপ।

আজো মরুশেয়ালেরা ধীর পায়ে
অসমাপ্ত যাত্রায়
কাঠঠোকরার পথ চেয়ে থাকে।

দূরেরা আরো দূরে

কমলিকা হাতের মুঠোয়
এক ফালি রোদ মিশে
দূরপাল্লার সাঁতারুরা সাঁতরে যেতে চায়
তীর অবধি
আগুয়ান নিম্নচাপে আকাশেরা কাঁদে
তীরেরা এক লহমায় বৃষ্টিতে ভেঁজে।

দয়িত বালিরা বালিয়াড়ি খোঁজে
সাঁতারুরা খোঁজে ফেরে
দূরবাসিনী

হয়তবা আজ ঘনঘটা
দূরেরা সরে গেছে আরো দূরে।

অলুণ্ঠিত কিছু স্বপ্ন

র‌্যাপিং পেপারে মোড়ানো ভালোবাসা
ভেদ করে আসে জলবায়ু
জলেরা পানীয় হয়ে যায় হৃদের কাছে।

রংগীন শাড়ীর আঁচল ছুঁয়ে ভালো কিছু আসা
আশায় আশায় বইয়েরা কথা বলে
পাতায় পাতায় পাতারা ছুঁয়ে যায় বনের কাছে।

র‌্যাপিং পেপার হয়ে যায় শাড়ী। শাড়ীরা আঁচল। আঁচলেরা আকাশী ছাদ।

ছাদের প্রস্থতায় তারা নেমে আসে, সান্ধ্যবেলায় দ্বিপ্রহর নামবে বলে।

তারারা তাদের হাত ধরে,
হয়তবা অনুভবে র্নিবাক কোন এক কবি দাড়িয়ে
অলুণ্ঠিত কিছু স্বপ্ন নিয়ে ।

আজ বসন্ত

বাসন্তী রংয়েরা একে একে জড়ো হয়
পলাশ-শিমুলের ছায়ায়।

শিল্প হতে থাকে ছড়ানো চুল
শ্যামল গালেরা ছুঁয়ে যায় টসটসে কমলার স্বাদ
হয়তো রুই মাছেরা ফিরে আসে জিভের কাছে।

থেমে থাকা রেলিংয়ের ধারে
গোলকেরা ছড়ায়
ফাল্গুনি বিকেল
পদব্রেজে নেমে আসে চিবুকের স্বপ্ন।

যতটুকু আগাছা ছড়ায় বাতাসে
সন্ধ্যা বাতি জ্বলে উঠতেই ফুলেরা
ঝুলে থাকা পর্দায়
একে একে
মিশে যায়।

মনে রেখো আজ বসন্তবেলা
অবেলায়
রাতের পালাবদলে বৃষ্টি নামবে বলেই
ভিঁজে যাবে প্রস্থতায় ।

পাড়ি

অমলিন কাধ ছুঁয়ে ফেলা অবসন্ন বিকেলে
ঝাঁঝরা হয়ে যায় অবরুদ্ধ সীমানা পেরোনো
মেটালিক হাতেরা

কাছিমের জন্মউৎসবে
নিটোল জলের প্রাণেরা মাছ হতে থাকে
সালোকিত শৈবাল উঠে আসে চোয়ালের কাছে

অন্ধকার ঘনালে
মিশে যেতে যেতে
তারা
অজানা জলের খোঁজে পাড়ি দেয়
চিরসবুজ বনের চিরায়ত
দীর্ঘতায়
একাকী মগ্নতায়
মিহি মসলিন স্পর্শ নাড়ায় বাতাস


তোবা (মৌনতায়)

হয়তবা চুপচাপ বসে থাকা
অধরার নীল সৈকতে
পৌরুষ দলে দলে
উদ্দীপ্ত সাগরের জলে মেশায় বৈকাল হৃদ
এক
দুই কিংবা
একাধিক প্রস্থতায়

স্থির

স্লাইডিং জানালার ওপাশে দ্রুত নেমে গেলো
আলোরা
আলেয়ার মতো

ফোঁটা ফোঁটা করে নামছিলো
বৃষ্টি
স্নাত সকালে ভয়ংকর ললনা
ভিঁজে একাকার

তবুও
কেউ একজন
মুগ্ধতায় জানালার নগ্ন গ্লাস বেয়ে বেয়ে নামতেই
বৈদ্যুতিক তারের ভেতর হয়ে
ছুঁয়ে ছুঁয়ে অনেক যান্ত্রিকতায়

মিলিসেকেন্ডের পালাবদলে আমি তৎ সম স্থির ।

ঘটমান

আমি কৃতকর্মহীন হয়ে আছি
নিঃশব্দে কাকতাড়-য়ারা দাড়িয়ে থাকে
অসময়ে বৈরাগ্যের লোটাকম্বল হাতে পথে পথে

নীড়হীন নিরীহ ঘাসেরা জড়ায়
অতীতের কাঁশ ফুলেরা র্নিজীব
জীবন্ত পলিমাটির বুক গেথেছে বহুকাল আগে

দ্রুত বসন্ত আসবে বলে
পার হলো সাইবেরিয়ান অতিথিরা
ধূসর কুয়াশারা মিশেছে প্রাগৌতিহাসিক অলীক স্বপ্নে
সহিসেরা আমিহীন লজ্জাবনত ক্রমশ
কৃতকর্মের দায় নিয়ে এলো
দমকা বাতাস কৃষ্ণচূড়া ডালের প্রান্তিক পতনে

আমিত্বের ঋতুবদল শুরু পৃথিবী জন্ম থেকে
ক্রমাগত খসে পড়ছে
ঘটমান সবকিছু

দুঃসময়

সব ছিড়ে যাচ্ছে
যেমনটা আজ ছিড়ে গেল চামড়া
আটকানো পিন পিনপতন নিরবতায়
ঝনকালো সবুজাভ টাইলস অনেকদিন ধরে
ধরতে ধরতে বাকলেরা উঠে যাচ্ছিল সরবে
সরব রবেরা প্রশস'তায় কমে আসে
ধোঁয়া উঠা পলিপ্যাক গলতেই
মোহময় হয়ে উঠে পাঁজর

পাঁজরের পিঞ্জরে ফালি ফালি কাটা দাগ
বহুকাল আগে হয়তবা
তরবারি নেমে এসেছিলো চামড়ার গভীরে
গভীর থেকে গভীরতর খাদেরা নপুংসক হতে থাকা
একটা হাত বেরোবে এক্সরের মাঝ বরাবর

হয়ত আজ রাত পেরোলেই কাল সকালে সূর্য গ্রহন
কাল বিকেলে হয়তবা ঘনো কুয়াশায়
কিংবা রাতের রন্ধনশালায় একটা বিয়োগ চিহ্ন

তামান্না

[আজ ফিরভি দিল ম্যায় এক তামান্না থি]

তামান্নার বেলকনিটায় গতকাল অবধি
অর্কিড ঝুলেছিলো

দিন দিন প্রতিদিন নেমেছিলো
চড়ুইয়েরা মেতে থাকতোই

আজ সকালে সেখানে শুন্য এক হ্যাংগিং রড।

হাম জিসে গুনগুনা নাহি সাকতেওয়াক্ত নে আয়সা গীত কিউ গায়া .. ..]

দোতালার ছাদ থেকে নেমে আসে চড়ুইয়ের ডানা
নামতেই থাকে

নেমে নেমে আসে তামান্নার কথা কানে কানে বলে যায়

[তামান্না হি থি পাল দো পালওহ বিন জিন্দাগী শুনা হো চুকা]

স স.. স. . সস.. .. চুপ কুছ না কাহো আব,

কোন কথা নয় আজ হতে
ছুটে যাওয়া পালকের সাথে

বাহুবন্ধনী

ওরা বাহুবন্ধনীর কথা বলেছিলো।

বাহুরা বন্ধনের কাছে এসে জড়ো হতেই দমকা হাওয়া
আঁচল উড়ায়
নেমে আসে তর তর করে মাটির কাছে
এক লহমার স্নিগ্ধতা

দিনবদলের পালায় ফিকে হয়ে আসে

ফ্যাকাশে রংয়ের পাখিরা উঠোন ছেড়ে
যায়
বাহুবদ্ধ হতে
থেমে থেমে কোন এক বসন্ত আসবে ছুঁয়ে
হয়তবা শুন্যতায়
বন্ধনহীন বাহুরা একাকার হয়ে হয়ে

পথহীন পৌরুষ

ওদেরকে কিভাবে বোঝাই এভাবে হয়না অনেক কিছুই ।

কিভাবে বোঝাই ওদের সান্ধ্যবাতির জ্বলে উঠার ক্ষনে প্রিয় সব অনুভূতি
হারায় স্বাদ অতিন্দ্রীয় লবনাক্ততায়

কিভাবে শোনাই ওদের রাত ঘনালেই যে সকাল আসে রোজকার সবকিছু
হারায় পথ অজানা মিশ্রতায়

কিভাবে জানাই নিরাবরন হতে থাকা দেয়াল থেকে দেয়ালে
মাঝরাতের পথহীন পৌরুষ
কিছুতেই কিছুই হারায় না।

নগ্নশিশু আর জীবিত অনুরা

গলিত আকরিক স্রোত থেকে হঠাৎ উঠে আসা ধোঁয়া
এই নষ্ট নগরীর
জীবিত অনুদের কায়ায় মিশে আছে
অবলীলায়

বিকেল ঘনালেই পম্পেই নগরীর আচ্ছাদনে
পার করে
দিয়ে

অপেক্ষায় থাকে

শেষ শীতের হলুদ মাখানো এক রোদ

ঠায় দাড়িয়ে থাকে
বিনষ্ট পাপড়িরা শৈত্যে
ফ্রোজেন লিমিট পার হয়ে লাভারা ধেয়ে আসে
নষ্টালজিয়ায়।

নষ্ট নগরীর আজ মধ্যাহ্নভোজ
অর্কেস্ট্রার ছন্দে ছন্দে
আমাদের মতো করে হ্যামিলনের বাশিঁওয়ালা বাজায়
নৈশব্দের মিহি মিহি সুরে
থেমে থাকে গলিত আকরিকেরা
হয়তবা
অদূরে কাঁদছে নগ্ন শিশু আর জীবিত অনুরা

আমি

সদর দরজায় দাড়ানো আমি চুপ হয়ে থাকে প্রতিটি
রাতের আধাঁরের কাছে

নির্জন এক ক্ষন
হেঁটে হেঁটে আমাদের বারান্দায়
কালো ছাঁয়ায় অনবরত মিশে যায়
ভেংগে যাওয়া ধূমকেতু ছুটে যায়

প্রতি রাতে
ধুলোয় মেশে এক জীবন
ঘনো ছাইরং খনিজেরা উঁকি দেয়

দেয়াল টপকানো আমাদের আমি
সপ্তর্ষি তারার খোঁজে পথ চলা শুরু করে

Wednesday, April 2, 2008

স্বপ্নচারন

স্বপ্নেরা হিমোগ্লোবিনের মতো কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত
রক্তেরা হারাচ্ছে স্বাদ
নিভু নিভু মোমেরা গলেছে অধিক রাত্রি অবধি
শিখারা হারাচ্ছে আলো
সবুজ পাতারা সালোকিত হয়েছে কম
দিনেরা হারাচ্ছে নিশ্বাস।

কাকে বোঝাই
তাকে নাকি তোমাকে

আমি আপাতত কোন স্বপ্ন চারন করছি না

একটা লম্ব রেখা ছেদ করে গেছে হৃদয় রেখা বরাবর
যেখানে স্বপ্নেরা থেমেছে দুঃস্বপ্নের হাত ধরে।

ওরা ফিরে যায়

ওরা ছবি আঁকে রিক্সার পেছন।

মনের ক্যানভাসে পড়ে না তুলির আচঁড়
তুলিরা হিমায়িত হওয়া বাতাস তুলে নেয়
বুকের গভীরতা।

চারপাশ তাকিয়ে দেখে
কিছুই নেই একাকী ক্যানভাস অশ্রুভেঁজা।

ওরা রশি টানে অথৈ জলে।
জলের গভীরতায় সরে না জল
রশিরা শুকায় বেমালুম আর্দ্রতায়

মনের শুন্যতা।

জলেরা ভেঁজে না
বাষ্পায়নে

একাকী স্রোতধারা কষ্টভরা।

ওরা চাকা ঘুরায় ব্যস্ত সড়কে।

ছেঁড়া কম্বল সরায় না কুয়াঁশা
চাকারা থেমে থাকে অজানা আশায়
জীবনের অপূর্ণতায়

ঘূর্ণায়নে

একাকী অলি-গলি ধৈর্যহারা

কোন এক ধূসর সকালে
কোন এক মলিন বিকেলে
কোন এক বিরাগী রাতে

তারা ফিরে যায় সিড়ি ছেড়ে
ফিরে যায় ফুটপাত ছেড়ে
ফিরে যায় আমাদের বর্ণিল আংগিনা ছেড়ে।

আমি, তুমি ও সে শুধু মৌনতায়

সাতারু শ্রমিক

ঐ দূরে দেখা যায় নীল নদী ।

সাতারু শ্রমিক আর মাছেরা প্রাণ পেয়ে ডাঙ্গায় মেলে ধরে ডানা

সাতরানো ঢেউ উড়ে চলে দিগন্তে
তীরে এসে ঠেকে নোনা বালি আর কাঁকড়ার ঝাঁক

সবুজাভ গ্রাম ফেলে তরী ভেড়ায় ক্লান্ত সারেং
মেলে ধরা শাড়ীরা দুলে উঠে দমকা বাতাসে

ওরা হেঁটে যায় বালিয়াড়ি ফেলে
আলেয়ার কাছে

নীল নদী তুমি কী জেগে থাকো

ধ্বনি

তারে তারে ভেসে আসে দূর সীমানার কন্ঠ
আকন্ঠ ডুবে থাকা মগ্নতায়

একনদী পার হতে হবে বলে
তুমি ছিলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে সহস্র জলসীমা

সীমারা অসীম কন্ঠে নেমে আসে ঝর্নাধারায়।

একাকাশ উচু বৃক্ষেরা হেঁটে আসে
আসে হেঁটে

আটকানো তারাদের হাত ধরে
তুমি থাকো

কথা বলো মুগ্ধতায়

অবলীলায় তারেরা ওপাশ ভেংগে পার করে আংগিনা

কন্ঠেরা

ধ্ব
ধ্বনি
ধ্বনিত হাওয়ায়

দো আঁশ লা

কাঠের শব্দে কাঠ বিড়ালী চমকে দাড়ায়
তাড়ায় ভূত।

ভুতেরা অভিভূত !

কথা বলে পা ফেলা

দো
আশ
লা

দো আঁশ লা।

নগ্ন বাসিন্দা

পথসভা ম্লান হয়ে যায় ছেড়া কম্বলে
পৌরাণিক গদ্যে-পদ্যে বিকেল নেমে আসে শৈশব লাগোয়া দেয়ালে

পোড়া টায়ারের গন্ধে মাতোয়ারা নৈশব্দ
এক দুই তিন নম্বর লেইন ধরে ডোবায় একচল্লিশ নম্বরে এসে হয়তবা থামে।

উচ্ছল সুইমিংপুলের সুরভিত কষ্টিউম আলগা হতে হতে ছড়ায় বাতাসেযতটা ধোঁয়া আকাশে

মাতোয়ারা আকাশ প্রায়শই বেরসিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন হতে পারে
তবুও
এ নগ্ন শহরের বাসিন্দারা নেমে আসে রাস্তায়

থেমে থাকা আগুন আবার হয়তো জ্বালায়
পোড়ায় ইট-বালি
মেশায় আকরিক
ভেঁজায় সিমেন্ট
কপচায় স্বাধীনতা

একটা পুতুল নেমে আসে
আরেকটা পুতুল হেটে আসে পুতুলেরা হাটা শিখেছে হাটতেই লোড-শেডিং কমে র্নিলোভ বন-ভোজনের চাঁদা কমে

পথসভা ম্লান হয় শীতের বাস-যাত্রায়
কাঁপতে থাকে অপেক্ষমান স্বজন
বিধ্বংসী ধ্বংসস্তুপ প্রত্নতাত্ত্বিক নগরীর খনন চলতেই থাকে

যতবার বেডরুম ছেড়ে যাবে না অজেয় নগরী
পরাজিত হতে থাকা নগ্ন বাসিন্দার হাত ধরে

ততবার শুধু ততবার এ নগরের বাসিন্দারা নগ্ন হতে থাকবে

ক্ষয়

প্রায় তিনশতাধিক হাড়েরা আজ শুধু দুইশতছয়

ক্ষয় ক্ষয় ক্ষয়

নিঃশেষে অবশেষে মিলেমিশে

একপ্রসস্থ মৃত্তিকায়
অবলীলায় শুধুই ক্ষয়।

একটা আলোর রেখা

সুরঙ্গের ওপাশটা বহুদিন ধরে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

একটা আলোর ক্ষীন রেখা

একটা অন্তত

ধূসর বিকেলে বাদুরেরা ঝাপটায় ডানা
সরীসৃপ নামছে তর তর করে

আমি এক পা করে এগুচ্ছি অন্ধকার নেমে এলো বোধহয়।

দীর্ঘ রাত হয়তবা প্রতিটি রাত শেষ রাত।

অঙকের খাতা

আমি হিসাবি নই কোনমতেই।

অঙকের খাতায় সাইত্রিশ বছর ধরে শুন্য। কি বলি তাহলে।

কেমন আছো ?

অনেকটা দিন-রাত্রি শেষে আজ কেমন আছো ?

অবনীকে পাশ কাটিয়ে রাতের যৌবন পার হয়ে
অনেকটা পাপড়ি মেলে ধরার ক্ষনে
জুঁই ফুল হয়ে গেলো ।

জুঁইয়েরা অবনীর হাত ছুঁয়ে ছুঁয়ে কিছু বলে যায়...

রাজকন্যার ক্ষিধে

ওরা পেটের ক্ষিধে বোঝে। কবিতা তো বোঝে না।

রাজকন্যাদের দিকে তাকিয়ে থাকি অবশ চোখে।

কবিতা তুমি ওদের তৃষ্ণা মেটাও। নতুবা ওদের চোখে একরাশ কবিতার দিগন্ত খুলে দাও।

চোখের পাতার সচল হলে যেন আমি দেখতে পাই

ওরা বেশ ভালো আছে।

তৃতীয় নয়ন

তৃতীয় নয়নে তৃতীয় দৃশ্য দেখে যেতে চাওনি।

অরুণিমা তোমার হাতের চুড়িরা ছলকে উঠে
লহমায় লহুময়

হয়ে চলে দিন রাত্রির নিদ্রাবিলাসে।

প্রতিবিম্বে আয়নায়িত হয়ে থাকা প্রতি ফল
বির্সজিত রাশি রাশি স্বপ্ন অ ধরা হয়ে থাকে
তুমি তৃতীয় দৃশ্যে
যবনিকায় কপোলের কাছাকাছি।

মাঝামাঝি এক পশলা বৃষ্টিতে তৃতীয় নয়নে
হেসে উঠে অরু ণি মা

দিনের সবশেষে
কিছু স্বপ্ন ফেরায় ।

কে জানতো?

একটি রেললাইনের স্লিপারে যতটা ফাঁক ছিলো। কত টা। প্রশ্নটা করা হয়নি।

সবাই জানতো।

হৃদয়হীন আকরিকেরা গলে যাবে একদিন। কোন দিন। প্রশ্নটা করা হয়নি।

সবাই জানতো।

কে জানতো ??

নৈশ ক্ষনে কয়েক টুকরো কথা


একবার স্নিগ্ধাকে বলা হয়েছিলো
যেবার শৈত্য প্রবাহ বেড়ে যাবে
ফিরে এসো সেই নৈশ ক্ষনে
প্রহরায় থাকা বুল ডগদের খোড়া পা মাড়িয়ে।

যখন হেটে চলা ছাদেরা পরম উৎসাহে যতটা ঘর্মাক্ত হতেছিলো ততটা উষ্ণতায়

পরতে পরতে ছড়ানো অর্কিডে
একদিন সে এসেছিলো।
সিফনে ধূমায়িত আলোয়।

নোয়ানো স্বপ্নেরা মেতেছিলো।
স্নিগ্ধার পরম নিশ্বাসে বার বার উঠেছিলো
হিমহিম করা নিশ্বাস।

নিশ্বাসে বাতাসে ভাসতেছে জোছনাবিন্দু।
তাবৎ কথারা র্নিদ্বিধায় বলতেছে । অনবরত কয়েক টুকরো কথা।


দূরের রাস্তায় যতটা আনমনে হেটে যায় টহল পুলিশের দল,
বাড়ির নৈশব্দের অন্দরমহল যতটা অন্ধকারাচ্ছন্ন,
যতটা দূরত্বে আমার চার রং আ প্রচ্ছদ,
ধ্রুবক চিহ্নেরা যতটা মৌলিক ততটা গভীর হতে থাকা রাতের ছাদ

আর
চারপাশ ঘিরে রাখা রেল ইং ইন হতেছে অনেক মমতায় স্নিগ্ধা তোমার সিফনে মিশতেছে একরং আ

আনবিক প্রশস্থতায়।

ঝিনুকের মুক্তোয় ভালোবাসা জমতেছে নৃত্যরতা উর্বর মৃত্তিকায়।

তোমার ডানপাশের বাহুমূলে বাঁধা সোনালী কবচ নিরাবরন আবহে বেশ দৃঢ় নয়
তবুও তুমি হাসতেছো নচেৎ কাঁদতেছো।

নৈশক্ষনে এক টুকরো কথা রেখেছো।

ভিন্ন অঙক

% দিয়ে মৃত্তিকা ভাংগা-গড়া হলো।

রকমফেরে উপাখ্যান। বার বার ( হিসাবের মারপ্যাচে)। অধ্যায় এবং অধ্যায়।

আমার হাত কাটা হলো ।
আমার ভাইয়ের পা।
আমার মায়ের লজ্জা।
আমার বোনের হৃদয়।
আমার পিতার না জানি কতকিছু।

@ হারে।

নদীরা শোনেনি।
তাদেরও বেঁধে ফেলা হলো।
পাহাড়েরা মানে নি। তাদের গায়ে আগুন।
কেটে ফেলা হলো বেয়ারা বন।

মনেরা কোন সমীকরন চায় নি। অঙক তো ভালোবাসেনি।

তবুও একটা ভিন্ন অঙ্ক জুড়ে নৃতত্ত্ব বদল...

চড়ুই পাখি

দু’একটি রোজ এসে বসে আমার জানালায়।

চড়ুই পাখি গুলো হর দমছুটো ছুটি। ছুটি নেই। ঠোঁটেরা ঠোঁট রেখে কিচির মিচির

দূর অন্ত অবধি রোজ সকালে দেখি।
বাঁধা শিকেরা বেঁধে আছে নিয়মে
পরম আত্মায়।

চড়ুইয়েরা খেলা করে। টিনের চালে সীমেরা মেলে থাকে।
বারান্দায় ছিটানো ধানেরা আকাশের নীল পর্দায় মেঘেরা হেটে যায়।

ওরা আসে । ওরা থাকে। ওরা মিশে যায়। আমার প্রতিবেশী । চড়ুই ভাতি হয়।

সেখানে কবিতা মেলে

কবিতা তোমাকে একান্তে পেতে
আমি পিজনে যাব কিংবা ব্লার্ড হবো

সোয়ানেরা পাল তুলে না ডানা মেলে হয়তবা অপ্সরা

তুমি ঘুমাতে পার যদিওবা আমি অকাতর

তুমি কাতরাতে থাকো ০ ব্যাথায়

যখনি বিলীন কবিতা তুমি সেখানে একান্ত একজনা কিংবা অজস্র

ওয়াইন শেল্ফে হেটে চলা

....ভাবতে নেই অত শত

আজ কি সন্ধাবেলায় আতশবাজি পুড়ছে
কতবার সান্ধ্য বাতি জ্বলছে

কতবার কন্ট্রাস্ট হয়ে কবিতা মেলছে ধারালো শাইন

ভাবছি না

কখনো কি

ভাবছি, সেখানেই শুধু কবিতা মেলে

ভিন্ন পাওয়া

র্নিভেজাল ঘুমের রাজ্যে
চোখের পর্দারা মিশে আসে।

বাষ্পীত বিছানায় শুয়ে থাকা
বিধ্বস্থ চাওয়া-পাওয়া।

তৃপ্তি কিংবা সন্তুষ্টি যাই বলি,
মনেরা কথা বলে দেহের ভাষায়।

অধরা

সদ্যস্নাত ভেঁজা খোলা চুল
একটা আলিংগনে চুপসে যায় ঠোঁটেরা।

প্রিয় মানবী তোমার প্রশান্তি জুড়ে
ভালবাসাঘনো সেকেন্ডগুলো হয়ে যায় অধরা।

তুমি কি তুমি?

গতকাল যে মানুষ জন্ম নিল
তাকে একটা প্রশ্ন দিয়ে দিলাম।

তুমি কি তুমি হবে ?

কাল যে মানুষ মারা গেলো
তাকে একটা প্রশ্ন দিয়ে ছিলাম।
তুমি কি তুমি ছিলে?

ভিন্ন চোখে

অরুণার কথা তোমরা হয়ত জানতে না,
সে গত কয়েকটা দিন না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে।

তোমরা খাতা-কলম নিয়ে বসো। মিডিয়ায় সে আবার জাগবেই।

কোন মিডিয়া..
কথা নাকি কথোপকথন। টক শো কিংবা র‌্যাম্প।

এক বিজ্ঞজনের ভাবনাজুড়ে আবার ভিস্যুয়াল পর্দায়।

তিনি অরুণাকে ভিস্যুয়াল দেখেন। ঘুমে কিংবা স্বপ্নে। যাই বলি।

তুমি ওভাবেই

তুমি ওভাবেই হাসতে। কাঁদতে।

হাসতে হাসতে ভিজে যেতো চোখ,
র্নিভেজাল চোখে কাজলেরা নেমে আসে ঠোঁটের কাছাকাছি।

প্রিয় তুমি মানবী হতে
কাঁদতে কখনো।সরলেরা তোমাকে ছুঁয়ে যেতো।

তুমি অনুভবে শিউলি পাতা
উজ্জ্বল শীতের রোদ
কিংবা ঝকমকে গ্রীষ্মের বিকেল

হয়তবা মানিপ্লান্ট প্লান্টেড হয়েছিলো তোমার জানালায়।

তুমি জানালা খুলে আকাশ দেখতে
আকাশেরা হর হামেশা ওভাবেই
কখনো কাঁদতো। কখনো হাসতো।

২ শুন্য শুন্য ৭

হাঁটতে শুরু করলাম।

সেকেন্ড ধরে। মিনিট পেরিয়ে। ঘন্টারা বাঁজতে লাগলো।
দিন পার হতেই ২ শুন্য শুন্য ৬। বেশ ক্যালকুলেটিভ।

দুই বিয়োগ শুন্য। ছয় যোগ শুন্য। কিংবা অন্য কিছু। যার যার মতোই।

পয়তাল্লিশ ডিগ্রি ধরে সমকোণ ছিলো। সমকোণের কেন্দ্রে অহরহ অসি'র বাক্যালাপ।

হয়ত একটা শিশু কাঁদছে। একজন মা প্রসব বেদনায় । কিংবা একজন বাবা ফুটপাত ধরে হাটছেন।

যথাযথ ধৈর্য্যে আত্মমগ্ন নগরনায়কেরা সেমিনারে

রিপোর্টের পর রিপোর্ট।

স্কুল ফেরত বাস। বাসের পিঠে অজানা ভবিষ্যত। মৃত্তিকায় লাল ছোপ।

বাসষ্ট্যান্ডে দাড়াতেই প্রিয়ার সাথে দেখা। তিন বছর আগের অংকের খাতায় শুন্য রেখেছিলো সে।

ওর চোখে র্দূলোভ ক্ষিপ্রতা। একটা ফোঁটা নিচে গড়িয়ে পড়ে। আমি পাশ কাটাই। আরেকটা বছর সামনেই।

২ শুন্য শুন্য ৭।

২ শুন্য শুন্য ৬

সারা বছর জুড়ে অপেক্ষা। শীতের শেষটা ফিরে এলো আবার। জানুয়ারী ছাড়িয়ে ডিসেম্বরে।

মৃত মানুষেরা চলে যেতে শুরু করতেই অপারেশন ক্লিন হার্ট।
ক্লিন হয়ে গেলো আশে পাশের প্রিয় অনেক কিছুই।
সফেদ শুভ্রতায় ছাপ পড়েরংয়েরা তেলাপোকা চিত্রে বেশ তৎপর।

নগ্ন উচ্ছাসে প্লাবিত ঘৃণা। অন্ধকার রাত্রিতে ক্ষোভের হাটাচলা।
অসম্ভব কিছু পরকীয়া সম্ভাব্য হতে হতে হোচট খায়।

ধ্বংস হওয়া একমানব মানচিত্রের কথা বলে।
দুষ্ট হাতের পোষ্টারে অসংলগ্ন নারী চিত্র।
সেকুলার পাতায় একটা বলিরেখা। বয়সের ছাপ।
অনমনীয় সাযুজ্যে একদল অতিমানব।

কিছু ছড়াকার। কিছু অনুবাদ। কিছু সংলাপ। কিছু অনশন। কিছু মনোনয়ন। কিছু নির্বাচন।

বছরটা শেষ করবো ভেবেছিলাম এভাবেই।
একটা অলৌকিক কিছু এসে টোকা দেবে আমার সদর দরজায়।

হলো না।

প্রথম আলো ফুটতেই একটা মৃত্যু পরোয়ানা ঘোষিত পাঁচ লাইনের সমঝোতায়।
অলৌকিক কিছুর পরিবর্তে আমার দরজায় লৌকিক তারা এসে যায়।
ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে।

স্বপ্নে হাঁটছো তুমি

স্বপ্নে হাটছো তুমি। পাশাপাশি।
অনেকটা ছড়ানো আয়তনে।
স্লিপারটা বেঁকে যেতেই তুমি পা মচকালে।
পা আবার মচকায় নাকি ।

মুচড়ে গেছে দু সারি ঘাস। দেবে গেছে নরম মৃত্তিকায়।
লজ্জাবতীরা কষ্টে কাতর। তুমিও কি ।

রেল লাইন ধরে তুমি স্বপ্নে হাঁটছো। কাঠের স্লিপার বাঁক নিচ্ছে ক্রমাগত।

জনপদ

একটা রাতের কথা তারা বলেছিলো।
তারারা যুবতী রাতের অপেক্ষায়।

এক রাশ শুন্যতায় অপেক্ষমান যাত্রীরা প্লাটফরমে । প্লাটফরমগুলো ক্রমশ সরে যায়।

একটা নৈশ ট্রেনের আসবার কথা। তারাময় রাতে।

বহুদুরে বুলেটিনে শোনা যায় নগরজুড়ে অসহযোগ। অবরোধে বেসামাল ট্রেন চালক।

রাতেরা অন্ধকার হতে যতটা গভীর অরণ্যে । যাত্রীরা সুনশান নিরবতায় ঘুমিয়ে যেতে থাকে।

শেষ রাত্রিরে টরে টক্কা শব্দে জানলো সবাই।
আগামীকাল হতে সৌর কলংকের ছোঁয়া লাগবে এই জনপদের আকাশজুড়ে।

অবনত মস্তক
অনবরত কিছু কথা
অনাবিল প্রশান্তি
অহরহ জমাট রক্ত
অমসৃন অবয়বঅ
লৌকিক বার্তা
অমানবিক মানবতা
অজাতশত্রু বন্ধুত্ব

অবাধ স্বাধীনতায় অজানা হয়তো অস্বাভাবিক মানুষের প্রণয়াকাঙ্খা অশরীরী ভাষায়।

মোমবাতি

মোমবাতি। জ্বলছে। একটা নীল রং পুড়ে পুড়ে শুদ্ধ হচ্ছে।

খাটি কিছু বিকিরন আলোয় মাতোয়ারা।

মোমবাতি। গলছে। একটা সাদা রং জ্বলে জ্বলে সেদ্ধ হচ্ছে।

শুদ্ধ কিছু বিচ্যুত হচ্ছে আগুন আভায়।
আলো-আধাঁরের এই সন্ধ্যায় লোডশেডিং ক্রমাগত অভিনব।
দিনের পর দিন চিত্র নাট্য বদলাচ্ছে।

একটা মোম। একটা বাতি । আর আমাদের সাঁঝবেলা।

আস্তাকুঁড়

একটা পাতা । ঝড়ে উড়ে গেলো টিনের চাল ছুঁয়ে ।

আগুনের ঝলকে ক্রমোত্থিত তাড়নায়মাইনাস-প্লাস নিয়ে ভাবছি বসে।

এই বিকেলে একজন পথিক হাত নেড়ে নেড়ে চলে যান। বলে যান সুপ্রভাত বন্ধু।

প্রস্ফুটিত কান্নায় মথিত সমীকরন মিলছে না কোন মতেই।
দ্যোতনায় মিলিয়ে হাওয়া ভরছি যতবার ততবার গ্যাস বেলুনেরা ফুলছে।

আকাশে উড়ছেই। অসংখ্য বেলুন। তুমি কি ভাবছো । বেলুনগুলো কেন নিচে নেমে আসে না।

একটা ঘরের চাল উড়ে গেলো। আরেকটি ধেয়ে আসছে হয়তবা। পেরেকেরা লড়ছে।

আমি কাঁদছি। কাঁদছে অন্য আরো একজন। আরো।

আস্তাকুঁড়, তুমি কেঁদো না। তোমার তো নেই ভয়।

আটপৌরে প্রিয় মানবী

গতকালকের সান্ধ্যকালীন আবহাওয়া বুলেটিনে অযথা বৃষ্টিকে ম্লান হতে বলা হলো।

তাই কি হয় ?

একজন আটপৌরে প্রিয় মানবী, তিনি হাঁটা শুরু করলেন।
কিছুদুর হাটতেই পেলেন মেঘহীন পাহাড়ের ছোঁয়া।


পাহাড়েরা মেঘ ছাড়া কখনই ভালো দেখায় না।
মেঘেরা বৃষ্টি না ঝরালে নয়।

পাহাড় ছাড়িয়ে যাবার সময় তিনি বলে গেলেন । আমি সাগরের কাছে যাবো। সাগরের নোনজলে বৃষ্টির ফোঁটা জড়াবো।

বৃষ্টিস্নাত সাগরের ফেনিল উচ্চতায় । তিনি ভিঁজতে লাগলেন। সফেদ শাড়ী। শিউলী রংয়ে পাড়।
রিনিঝিনি লাল রেশমী চুড়ি। আর নুপুরেরা। তরঙ্গায়িত।

Tuesday, April 1, 2008

বর্নমালার প্রচ্ছদ

সকালে ঘুমভাংগা চোখ। চোখেরা ঘুমোতে চায় আরো।

আমি দেই না।

তোমাকে উঠতেই হবে। যেখান থেকে আমি ঘুমন্ত শব্দের আবহে তছনছ।


তোমার স্কুল ব্যাগ। ব্যাগেরা তোমাকে বায়োনিক বানায়। বেশ লাগছে।


দুপুরের অলস কন্ঠে তুমি নিবিড় হয়ে থাকো বালিশের সাথে । বালিশেরা কথা বলে।



আমি চুপ। তাকাই নিস্তব্ধতা। তোমার নিরীহ চোখে আমার স্বপ্ন। একাগ্রতায়।


সন্ধ্যার মিইয়ে পড়া । যেখানেই পথ শেষ। সেখানেই শুরু তোমার ।


অনেকটা আমাকে ছাড়িয়ে ম্যারাথনে শেষ ল্যাপ ।


তোমার অংকন। আমাদের শাদা বাড়ী আকঁছো প্রতিনিয়ত।


রংয়েরা রংহীন হয়ে যায় সাদা পাতায়।


রাতের কাথাঁরা নকশী হতে থাকে। আমি পাশে। তুমি হাত রেখে।
একটা আলো-আঁধারি।


তোমার সকাল শুভ্রতায় আমার প্রতিবিম্ব। না হতে পারে না। কি হতে পারে না।


বর্নমালার প্রচ্ছদ।


জানি না। তোমাকেই জানতে হবে সবকটি প্রশ্নের উত্তর।


আমার না বলা বাক্যটা শেষ করতে হবেই।

আবারো তুমি স্মিতহাস্যে

আবারো দেখছি সেই স্মিত হাসি।
অপলক চোখ।
নিরপরাধ প্রক্ষেপন।

চুপ!
একটা তৈলচিত্র আঁকবো বলে তোমার পোর্ট্রেট ভাবতেই তুমি সেই ।
ঝরঝরে মুক্তোরা কাচেঁর পাটাতনে টপ টপ করে পড়ে।

আবারো চুপ!

রাত্রি বিলাস ভেবে তুমি স্মিতহাস্যে চন্দ্রিমা রং দিতে বলেছিলে।

কোথাই পাই বলো তো?

গত শীতে কিছু উড়ে এসে পড়েছিলো উত্তরের হাওয়ায়। কুয়াশারা আজ বিকেলে তোমাদের পাড়ায়।

আমার লাগোয়া আঁকার ঘরে। তুমি হাসছো। একটা স্থির চিত্র। একটা তৈলচিত্র।

জরুরী পেইন্টিংগুলো আজকাল বেশ হিংসুকে। তোমাকে জ্বালায়।

মাঝে মাঝে তোমার কপালের কাছে এসে খামচি দিয়ে যায়।
তবুও তুমি স্মিতহাস্যে। গলায় বাঁধা কালো পুতিরা জ্বলজ্বলে।

হলুদাভ প্রশান্তিতে সবুজ জমিন।

বিমূর্ত রাত্রি এসে ছুঁয়ে যাবে তোমার বেলকনি।

স্থির চলচিত্রে।

আমাতে তুমি

একটা রাত এসেছিলো। রাতের আবার দেরী কিসের তবুও তার কথা।

বাবা তুমি এতো দেরী করো কেন। আমার বেশ ভয় করে।

ওর কোমল হাত বুকে ধরে বলি । সবে তো কৈশোর পেরোচ্ছে।
এখনও অশান্ত ক্ষনগুলি বসে আছে আনমনে।

এতো ভয় কিসের। আমি তো ছড়িয়ে আছি সবখানে।

তোমার হাতে।
তোমার মস্তিষ্কে ।
তোমার চেতনায়।

কাছে আসা। জড়ানো গলায় আমি স্তিমিত হয়ে পড়ি।

ছড়িয়ে পড়ি রক্তের প্রবাহে। আরো কথকতায়। বুকের গভীরে স্পন্দনে।

তুমি তো আমার মাঝে । কিংবা। আমি ঠিক তোমার সরল রেখায়।

তোমার স্বপ্নেরা

আমার দিকে তাকিয়ে তোমার স্বপ্নেরা দীর্ঘশ্বাস নেয়।

সকালের প্রথম সূর্যের সাথে ম্লান হাসি। দুপুরের একাকীত্বে দাড়ায় । পথ চলা থামে।
অবিকল বিকেলের মতো ধূসর হতে থাকে।

স্বপ্নেরা হাটাপথে বেশ দৌড়ে যায়। কখনও স্প্রিন্টের বাটন ধরে। কখনও নৌকাবাইচ।

প্রায়শই তোমাকে বলতাম নদীর স্রোতের বিপরীতে সাতঁরে যেও না।

শানিন্তা, তুমি হাসতে। হাস্নাহেনার ঘ্রান অনুভবে।

রাতের জোছনার দিকে তাকিয়ে আমি শুধু নিস্ফলা চর্তুদশী ভাবতাম।

তুমি হয়ে যেতে চতুস্পদী । স্বপ্নেরা চুপ চাপ বাড়ী ফিরে যেতো।

হালখাতা

হতবিহবল হয়ে বামদিকের কাধঁটা নাড়া দিলাম।
কাঁধেরা কথা বলতে শুরু করে। জানি না। কিছু না।

তারা নিজেদের কথকতায় সাক্ষ্য দেয়। জীবন পঞ্জিকার প্রতিটি লহমায় তারা । জেগে থাকে দিন রাত।

আজ আমার হালখাতার সময় হয়ে এলো। এটা কি বলতে আছে ?

বালুচরে

জলেরা ছুটে আসে বালির কাছে। বালিরা তোমাকে ডেকে নেয়। তুমি জলের ভেতর।

নাহ! ঠিক তা নয়। জলেরা ভেসে আছে তোমার উপর।

লাগোয়া ফতুয়ায় তুমি মেরুন। মেরূনেরা আর্দ্রতায় কামার্ত চোখ।

চোখে চোখ রেখে এক পাশ সরে যায় বালুচর জেগে আসে।
ক্রমশ ডুবে যেতে থাকি বালুচরে।

গণতন্ত্রের দস্তরখান

গণতন্ত্রের পোষাকগুলি বাই-ফোকাস্‌ড ।
অবতলীয় প্রক্ষেপনে ছায়া পড়ে প্রতিনিয়ত। সাদারা হয়ত আরো সাদা।

দাগহীন। দাগহীন পোষ্টার। অবাধ নির্বাচন চাই।

চার রং পোষ্টারে ওদের ছবি। সাদা পোষাকে রংগিন আলপনায়।

একটা বৈদ্যুতিক বাতির পাশে সাদারা । তাদের পাশে মাল্টি-ষ্টোরড।

উৎসবে মাতোয়ারা অমলিন যমজ ভবনেরা। আর তাদের পোষ্যরা।

বালিয়াড়ি

জুড়ে ধূসর মানুষেরা জয়ধ্বনি দেয়। বিগলিত জয়ধ্বনি। অবোধ্যতায় হাত তালি।

যুদ্ধ

জয়ের আজ বেশ তাড়া।

আটপৌরে গণতন্ত্রের দস্তরখানে সেদ্ধ মানুষ ধন্য হবে নতু্বা
বাই-ফোকাস্‌ড প্রচ্ছায়ারা প্রলম্বিত হলে আরেকটি দাগহীন পোষ্টার শোভা পাবে নগরজুড়ে

সেপ্রইড বরফকুঁচি

প্রায়শই আমি স্নো-ফল্ড হয়ে যাই।

জিলেট ফোমেরা ঝরে পড়ে সারা গাল বেয়ে। ছড়ায় স্তরে স্তরে।

সীমানার বলিরেখায় ঘাসেরা বুনো হয়ে ছিলো এতোকাল।

ফেনিল মিশ্রনে আস্তরায়িত হতে থাকে ত্বকেরা
মসৃন অবয়বে দীর্ঘ উপত্যকা একাকী শুন্যতায়।

-একটা দক্ষিনায়নের ট্র্যাক ধরে কাঁটা যেতে থাকে সমতলভুমি

উত্তরের হাওয়ায় আজ বিকেলের শৈত্য প্রবাহ। কাঁপতে থাকে জিলেট। সেপ্রইড বরফকুঁচি।

সবাই শুন্যে উড়তে থাকে-

দ্বীপ

একটি দ্বীপ হেটে বেড়ায় নেমে আসা ফসলী জমির এক পাশ ধরে ক্ষীনকায় স্রোতে
কাঁদা মেশা তীরে ডুবে থাকা স্নায়বিক রোদ যখন
ভেঁজা মাঠ

-শুকনো ক্ষত লেপ্টে থাকে প্রচ্ছায়ায়
থেমে থাকা বাতাসের গতিপথে
র্নিবোধ সবাই

সকালের মত্ততায় উড়ে যাওয়া পাখি দেখে র্নিবিকার
এক তরুনীর গমনে

পাললিক কিছু শব্দ
অবলীলায় পেছন ফেরে তাকায়।

জ্ঞানতঃ

মানুষ তুমি একবার বোঝো তোমার পায়ের তলায় মাটি সরে গেছে তোমার নিজের পায়ের চাপে।

অতঃপর সামনের বিসতৃতি দেখো আর হাঁটতে শুরু করো...

চিঠি

একটা চিঠি।
আসবেই ।
উড়ে যাওয়া বাতাসে।
বাতাসে মেলে ধরা পাল।


ঠিকানাহীন খামের উপরে। শিরোনামহীন কবিতা। নিজেকেই খুঁজে ফিরে।

শিশির

ধীরে ধীরে ঝরে পড়ো । শিশির ফোঁটায় । দুর্বাঘাসের বুকে লেপ্টে থাকো।

শীতল পায়ে ছুঁয়ে যাও। ছুঁতে গিয়ে মিশে যাও। মিশে গিয়ে শিরশিরে অনুভূতি।

অনুভব করি। অনুভবে শিউলি আমার দ্বারে। কমলারা শাদায় ।

শানিন্তা আজো কি রোজ সকালে উঠোনে আসো ?

খুব ভোরে । ভেজা চুলে। লেপ্টানো পশমী চাঁদরে। আলোরা মাটি ছোঁয়ার সাথে সাথে।

মৃতপ্রায় কিংবা মৃতবৎ

রৌদ্দুরের পাশ ঘেষে যৌবন আসে। দ্রুত নেমে যায় সিড়ি বেয়ে।

নিচতলার চোরা কুঠুরীতে বাস করে সময়।

সময়ের স্পর্শে তুমি মৃতপ্রায়। কিংবা মৃতবৎ।

তুমি বৃদ্ধ । তোমার পাঞ্জাবীর হাতায় ছাঁয়া পড়ে।

এক অর্বাচীন পৌরুষের।

স্বয়ং

কিছু প্রশ্ন ছাড়াই ভাবছি চৌরাস্তায় জটলার কথা।

ভাবছি প্রিয় নেতা এবং সমবেত জনতার কথা।

আর ভাবছি
সম্মানিত দর্শক-শ্রোতারা কি জানেন ভূড়িভোজ
আর রেসিপি..


তাদের নিজেরি মাংস রোস্ট হবে জানেন বোধ হয়,

স্বয়ং.....

মানুষ শুধু মানুষ হয়ে যাও


ভেবেছিলাম অরণ্যের কথা। ঘনো ঘনো কিছু সবুজাভ আলো।
ভেবেছিলাম সাগরের কথা। ঘনো ঘনো কিছু শুভ্র ফেনিল ঢেউ।
ভেবেছিলাম আকাশের কথা। ঘনো ঘনো কিছু নীলাভ মেঘ।
ভেবেছিলাম মাটির কথা। ঘনো ঘনো কিছু পলল মাটি।

ওরা আমাকে ভাবতে দেয়নি।
ওরা আমাকে জানতে দেয়নি।
ওরা আমাকে বুঝতে দেয়নি।
ওরা আমার সবকিছুতেই আমাকে নির্বাসিত করেছে।


খুব ইচ্ছে ছিলো বলে যাই।
আমি ওজোনের নিশ্বাসে গলে যাবো ।
নেমে যাবো তর তর করে হিমবাহ হয়ে।
ক্ষীয়মান শুভ্রতায় বিষাক্ত হবো। তবুও পারমানবিক চুল্লীর আশ পাশ ঘিরে লিখে যেতে চাই। একটি বাক্য।


এপিটাফজুড়ে লম্বা একটি লাইন।

পেরুভিয়ান পাহাড়ের আদিম বসতিতে
ইজিপসিয়ান মরুভুমির বালিয়াড়ি ঘুরে
আর্কটিক বরফের ইগলু দেয়ালে
হিমালয়ান পার্বত্যে
এবং
প্রিয় বাংলায়

”মানুষ শুধু মানুষ হয়ে যাও”

কোমল রং

শানিন্তা।

তোমার শাড়ীর মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলে একটি কোমল রং।

আঁচলের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিতে গিয়ে কোমল বৃষ্টি হতো। টিপ টিপ বৃষ্টি। আলতো ছোঁয়ায়।

গতকাল বিকেলে হঠাৎ আকাশজুড়ে ঘন কালো মেঘ। আমার বেলকনি ভিজে যায়।
চোখে এসে পড়ে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুজল।

ভালো আছো তুমি ?

আকাশের দু’হাত

আকাশের দু’হাত ক্রমশই নামছে মাটির কাছে।

আজ মাটি ছোঁবে। মাটির শিরশিরে দৃঢ়তায় নিজেকে সঁপে দেবে।

কেউ কিছু বলো না ।

আজ ওদের সবকিছু

রাতের মলিনতায়

কুয়াঁশা ঘন হলেই গোধূলী নেমে আসে।

রাতের মলিন পর্দা নামতেই ঘনীভূত বায়ু নেমে আসে চৌকো বাক্সে।

কাঁচ হয়ে ক্রিষ্টাল কালার আগুন। আগুনের বাক্যে লাল আভা।

তিনি চলে এলেন সব ছেড়ে। ওপাশের নাট্যমঞ্চে আজ ম্যাকবেথ।

রাতের মলিনতায় আজ ঝড় নামবেই..

শব দ

একটা শব্দ আঁকড়ে ধরে হাঁটছি ছত্রিশটা বছর।
জানতাম না গতকালও।

আমার মস্তিষ্কের কোষে কোষে ছড়িয়ে আছে সপ্রতিভ।
মৃত্তিকায় মিশে আছে সমান্তরাল এক মুঠো শীত।

শব্দেরা শবের মতো । শবেরা সবার মতো। শীতেরা কোষের মতো।
নিউক্লিয়াস ধরে বিচরিত শব্দ শেষ নিশ্বাসে থেমে যায়।

ক্লান্ত হওয়ার আগেই শ্রান্ত পথিক আমি আজ জানলাম।
অনুভবে শুধু একটি শব্দ। শব । একটি দ ।

জোছনা আজ নেই

গতকাল বলেছিলাম ভয় নেই আমি আসবো।

একটা রৌদ্র আঁকবো ভেবেছিলাম। তোমাদের আংগিনায়।

আমি এসেছি সকালের সূর্যের আগেই। রৌদ্র আঁকতে পারিনি।

এক পশলা মেঘ এলো। ঝড় এলো।
উড়ে গেলো বারান্দায় লাগানো টব। মাটিরা নিজেরা কোদালের বুকে লুটে পড়ে।
জেগে উঠে ৬ ফিট প্রশস্থতায়।

বিকেলের বিষন্নতায় তোমাদের বাড়ি
সামনের খোলা মাঠে সারিবদ্ধ মানুষের।
আকাশের দিকে তাকিয়ে রৌদ্রের কথা ভাবছে।

আমি সন্ধ্যা নামতেই বাসায় ফিরে এলাম।

জোছনা আজ নেই। তোমরাও নেই।

আমার ভয় আমার ঝুল বারান্দায় হ্যাংগিং রডের সাথে ঝুলছেই।

আমি কাঁদছিলাম

আমি কাঁদছিলাম।

অসলো সিটি হলে সেই সৌম্য পুরুষ দাড়িয়ে।

আমার বাংলাদেশ দাড়িয়ে। সদাহাস্য তিনিও কাঁদতে শুরু করলেন।

কবে তাদের বোধোদয় হবে। তারাও কাঁদবে আমার মতোন।

দন্ডহীন অবয়বে

একটা কালো আকাশ । কালো হতেই আমি নেমে আসি নিজের মধ্যে।

আমি বিক্ষিপ্ত হতে চাই না। তবুও কাঁচেরা ভেংগে পড়ে। কপোলের কাছাকাছি।

রক্তপাত ভালো নয়। যদি তোমার রক্তে ঋনাত্মক পাওয়া যায়। ব্লাড ব্যাংকে নিরপরাধ হয়ে যাই।

দন্ডহীন একটা অবয়বে দন্ডিত হতে হবে। নতুবা আকাশ জুড়ে বৃষ্টি নামবে না।

আমি বিক্ষিপ্ত হই না । আমি শীতল হতে চাই। বারবার চিৎকার করেছি।


কালো আকাশের আঁচল ধরে বলতে চাই। জনগণ তোমরা ভয় পেয়ো না।
সহসা পললভুমি পাবে তোমরা।
শস্য ফলাবে।

তারপর মেঘ ঘনালে একা একা হাঁটতে থাকি
আর তাকে বিল
চলো আমরা মেঘের পুরুত্ব মাপি..

চোখেরা কথা বলে


দুটি চোখ ।
চলে গেলো দীর্ঘ রেখায়।
কাজলেরা মিশে মিশে কালো হতেই
টানা হলোকাজল রেখা।
একটু বাঁক নিতেই আমার দিকে ফেরালে।
বাঁকা চোখে। সোজা চোখে। বন্ধ চোখে।
আড়মোড়া ভাংগে আধো অন্ধকার।
আলো হয়ে চোখেরা তাকায় তুমি প্রিয় হয়ে যাও তৎক্ষনে।
চোখেরা তোমার হয়। তুমি তাদেরি।


একটা টোল পড়বেই তোমার গালে।
টোলেরা সহসা সরে যায় । ফিরে আসে দু’গাল ছুঁয়ে।
গালেরা হাত। হাত থেকে অপলক ভাবনা।
অপলক দেখতে নেই বলে ভাবতে থাকো।
রিস্ট ওয়াচ হেসে বলে আমি আছি। ক্রমাগত কথা বলি।


চোখেরা কথা বলতোই।
আর ঠোটেরা ইশারায় ডেকে আনতো
ঐন্দ্রিজালিক সাদা প্রচ্ছদ।

সাদা বলতেই তুমি হাসতে।
ক্যাফেটেরিয়ার টেবিলে কফিরা আর
ওপাশের যুবক।
তুমি ভাবতে যুবকের ওপাশে কি ?

জলীয় অথবা বাষ্পীয়


প্রথম নিশ্বাসে শব্দ এসে যোগ করে একটি মৌলিক সংখ্যা।
১ হতে হতে প্রতিবার ভাইটালিটি ভাবি। ফার্টিলিটি তেমন একটা না।


গত রাতে সোমার হাত ধরে বলেছিলাম
আলফা লেভেলে চলো দুজনে বেড়িয়ে আসি।


পরিধি নিয়ে ভাবতে নেই।
ওরা সীমানা ফেলে কখনোই কিছু ভাবে না।
রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মাইক ধরে টান দিতেই <> হয়ে যায় সবকিছু।

তর তর করে ডেসিমাল কমতে থাকে
জানোই তো এই চৌরাস্তায় শব্দদূষণ সংরক্ষিত।

চলো মাইক্রোফোন হাতে নেই।


তিনি তো জম্পেশ আছেন ঢালীয় প্রবাহে।
অহেতুক জ্যামিতিক ভাবনা আসতেই গুণিতক হওয়া

কিছু সরল অংকের বন্ধনী
থেমে যাওয়া শেষ সমর্পনে।

বারবার বলি লাইব্রেরীটা ওভাবে আগলে রেখো না
তারপরও এল-শেপড সবকিছু অভিধানিক হয়ে পড়ে।

আমি স্মিতহাস্যে !


জলীয় পদার্থের উপর খুব একটা ভরসা করতে নেই।

সুযোগে অবয়ব বদলায় ।
বাষ্পীয় হতে সময় নেয় না কয়েক সেকেন্ড।
কখনও ঐ কখনো ঙ হয়ে যায়।


তবু মাঝে মাঝে কিছুই হয় না। হয়ে পড়ে আশ্রিত মহাকাশের। কখনো বিলীন।

বর্ন কবিতা

ক.
সমান ভাবতেই তৃতীয় নয়ন জুড়ে এলে তুমি।
তাই
কাউকে ভালবাসতে নেই যতটা চন্দ্রবিন্দুতে এসে হাফ ডান,

ক হতে চন্দ্রিমা উদ্যান
তুমি জোছনা হয়ে থাকো।


খ.
খাদ্যনালীতে আটকে যেতে
তোমার নাম ভাসছিলো ব্ল্যাকবোর্ডে।

পাকস্থলীতে আজকাল কিছুই হজম হয় না
রসনা বিলাস ছেড়েছি বটে।

বিলাসিতার কথা ভাবতেই তোমাকে বাদ দেই
প্রতিদিনকার সিডিউল থেকে।


গ.
হীন বন যতটা কাছে আসে
ততটা রিমঝিম বৃষ্টি ।

জানিস তো আমাজানে প্রায়ই বৃষ্টি হয়
গাছেরা আকাশ ছোঁয়
পিরানহা দল বেধে আসে।

ম্যানগ্রোভ মূল আকাশ তাকায়
বৃষ্টির ফোঁটা গিলতেই থাকে।


ঘ.
রের জানালা খোলা ছিল।

আলোরা এসে টেবিলের কাছাকাছি
একটা কবিতার বই
সংশ্লেষিত হতে থাকে

আরেকটি কবিতা জন্ম নেবে বলে।

কবিতার আবার জন্ম নেয়া অবান্তর নয় কি

সে তো জন্ম থেকে জ্বলছি ..

ঙ.
সেজেছিল এক রাজকুমার।

রংয়ের আকাশ জুড়ে
মেঘেরা হটায় কালো ধোঁয়া
রাজকুমারের আজ শেষকৃত্য

তাই কবিরা রাজপ্রসাদে
প্রজারা হাভাতে।

তাতে কি? আজ তো অবেলায় বৃষ্টি নামবেই।


চ.
চাইতে নেই বলে পরিস্কার হয়ে গেলো সবকিছু,
এক রাতের প্রহসনে ত্রিশালের সমতল।

তত্ত্বাবধাকীয় চালে কিস্তিমাত
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে
ঘন কাশবন।

চাওয়া হয় নি তাই অনেক কিছুই।


ছ.
ছুড়ে দেয়া হয়েছিল।

তাই ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে নেয়া।
এক প্যাকেট বিরানির উচ্ছিস্ট আরএক প্রস্থ বদ রক্ত।

সব কী ছুড়ে দিতে হয়?


জ.
জাহাঁবাজ এক সেনাপতি
জানতে পারেন নি কখনো

কতটা বুলেটবিদ্ধ হলে মানবতা আহত হয়।

প্রতিটি আগ্রাসনে-

একটি পারমানবিক বোমা
একটি দ্বিখন্ডিত ভুমি।

তিনি কখনো জানতে পারেননি
একটা বুলেট কতটা অন্ন দিতে পারে বিনিময়ে।


ঝ.
ঝাউ গাছটা বড় হলো।

সত্যি !
চতুর লোকটি জানতেন সেটি
তবুও সবার অগোচরে তিনি
প্রশ্নবিদ্ধ করে দিলেন।

ঝাউ গাছ আর অন্য সবকিছু।


ঞ.
মিঞা বাড়ির পাশ ঘেষে কখনও চপ্পল পড়তে নেই
ছাতা তো দুরের কথা।

সেটা গণতন্ত্রে হোক কিংবা সামন্ততন্ত্রে।

রহিম চাচার সাত বছর বয়সী ছোট ছেলেটা কি সেটা জানে?


ট.
টাকা শতখানেক
লেখা থাকে < চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে।

কেউ কি চায়?

সবাই তো কেড়ে নেয়।


ঠ.
ঠুনকো কথায় কিছু হয় না।

হতে নেই। হলেই বা দোষ কি?

কথা বলেই তো ঠুনকো না হলে তো গ্রানাইট পাথর।

হীরের বা দোষ কি > না ভাংলে কেটেই ফেলি।


ড.
ডালিয়ার কথায় প্রথম সপ্তাহ।
ডানদিকে মোড়ে দাড়িয়ে ঠায়
রোদেরা মাথার কাছে খেলা করে

আজ শুভ দিন বলে ট্রাফিক মোড়টা আটকে যায়
যান্ত্রিকতা হুমড়ি খায়
ডালিয়ার দ্বিতীয় সপ্তাহে।

চাপ

অহেতুক চাপটা নেই। চাপেরা অনায়াসে গিলে ফেলে আমার ভালোমানুষী চেহারা।

প্রতিবার নিজেকে সান্ত্বনা দেই। প্রবোধ দেয়াটা বেশ মজার বিষয়।

সবাই জানে।

আমিও আশ্বস্ত হয়ে লাঠিচার্জ অনুভব করি।
বুকের মধ্যে একের পর এক
বেয়নেট চার্জড !

গদ্য ভাবি। কবিতার একটা রিদম নিয়ে তর্ক করি। ভালোমানুষের আবার রিদম কি?
এটাও ভাবি.......


এর চেয়ে ঢ়ের ভালো গদ্য কিঙবা

ক্রীতদাস

অহেতুক মৃত্যু। মৃত মানুষেরা হাটতে জানেন না।

অ বিহীন কোন হেতু ছিলো না
তবু মৃ

নগরীর করিডোরে একটা একটা করে কফিন উঠে আসে।

কৃতদাসেরা মারা গেছে

এ কথা বলতেই
সিমেট্রির সবগুলি কবর
জেগে উঠে ।

কেউ প্রশ্ন রাখে না, কোন ক্রীতদাস হাটতে পেরেছে ..

অনামী এক বৃক্ষ

অনামিকার হাত ধরে অনামী এক বৃক্ষের বেড়ে উঠার কথা ছিলো।

ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে পানিরা কোমড় সমান উঠে আসে।
জীবন্ত মূলেরা খাড়া খাড়া হয়ে ক্যানভাস আঁকে নৌপথে।

নাবিকেরা দিক খোঁজে অনামিকার হাত ধরে
এক চারাগাছ যৌবন পাবে বলে।

অনামী এক বৃক্ষ বেড়ে উঠে ভাটার স্রোতে...

রং

মুখ টিপে হাসতে যখন
কথারা আড়াল হতো প্রলম্বিত রেখায়।

তুমি রংয়ের কথা বলতে,
দেয়ালের রং

দেয়ালিকার প্রচ্ছদের কথা বলতে।

রংয়েরা গল্প বলে এ কথা বিশ্বাস করতে।

আমি তোমার ত্বকের স্পর্শে বলতাম
কোনো রং গভীর নয়
যতটা কালোরা হয়।

গভীর যতটা চিবুকে ততটা ক্ষত মিশে যায় ত্বকে।

একটা তিলে সমরখন্দ কেনা হতো,
সমতলভুমি ছেড়ে হিমবাহ এর পথ ধরে

তুমি আসতেই রংবাজ হয়ে যেতাম আমি।

কেঁপে যাওয়া আদল

দূর থেকে দূরত্ব মাপি।

প্রতিবার তুমি কমে আসো লাগোয়া চাদর হয়ে।

দ্রাঘিমার কোণে ঈষৎ বেঁকে যাওয়া পৃথিবীর মানচিত্র।

সমান্তরাল স্বপ্নে জন্ম দিতে থাকে জীবানু।

একে এক অনুরা পরমানু সাজে। ছড়াতে থাকে আরো দূরে। বিছানো অবয়বে আফ্রোদিতি কাঁপন ধরে।

ভুলে যাওয়া হয় না কোনভাবেই।

কেঁপে যাওয়া আদলে কখনো কি ভুলে যাওয়া যায় ??

বিকল্প শব্দ

একটি বিকল্প শব্দ ভাংলো বলেই প্রতিকল্পে গ্লাস উপচালো পানি।

পা থেকে নিচের দিকে যতই নামে একটা ছাপ রেখে যায়।

প্রতি ছাপে আদি মানব আসেন ।

আদিরা সবসময় অকৃত্রিম থাকে না। অ থেকে অনাবিস্কৃত। কৃপায় ট্রিমড কিছু শব্দ।

প্রতিশব্দে আদি মানবী হাসেন।

বেঘোরে

সব কিছু দ্বিতীয়বার দেখছি। সবকিছু বেঘোরে।

ভাবলাম জ্বালিয়ে দেই আগুন। পুড়ে ফেলি জলসা ঘর। দেয়াশলাই খুঁজতে গেলাম চন্দ্রপাহাড়।

কটা কাঠির বিপরীতে অনেকগুলো না-বোধ। অনেকগুলি ঘৃণা।

বার বার একটি করে ছুড়ে দেয়া তৃতীয় কবিতা।

ময়ুরের পেখম মেলে কাকেরা যতবার ছদ্মবেশে । প্রতিবার কালো পালক ঝরে পড়ে।

ফুল শয্যায় তোমাকেও একসাথে দুটো করে পেয়েছি। জানতে দেই নি কাউকেই।

ক্ষমা করো। সবি বেঘোরে।

কালো

কালো সব কিছু এঁকে নিলাম ।

তুমি বুঝতেই চাইলে না কতটা রং প্রচ্ছদ হয়ে এলো। কতটা আমি। কতটা কালো রং।

দিন শেষে আমি নিশ্চুপ !

অচেনা বন্দর

একটি র্নিবোধ স্বপ্নচারন করে এ শহরের নাগরিক তোমরা সবাই রাত দেড়টায় জেগে উঠো ।
প্রমত্ত শব্দে হেটে চলে অগ্রজ

প্রথম সঙ আবাস ছাড়তেই রাতভর সুনশান
অচেনা মৃত্তিকায় তারা ঘাটি গড়ে।

রাতেরা পর্দানসীন হয় বলে জোছনা নামে। আজ পূর্ণিমা তাই-

প্রহেলিকা নাচন নাচতেই বেআব্রু তুমি হয়ে যাও ধর্ষিতা না হয়ে



স্যাভলন সৌরভে

হাসপাতালের বেড উপচানো স্যাভলন সৌরভে বেশ আছি।

গতকাল পত্রিকা উল্টাতেই তোর মুখ। আরামসে আছি।

প্রতি প্যাক ট্যাবলেট গেলাতেই হন্তদন্ত পাখিরা জানালায় উড়ে এসে বসে। কড়া নিরাপত্তায় রাখে আমাকে।

দখিনের জানালা বলেই শীতকাল বুঝিনা।

বুঝতেই হবে এমন কোন দাস-খত দিয়ে আসি নি কারো কাছে ।
না তোর কাছে। না নিজের কাছে।

ভয় নেই। নেই সংকোচ।

বেশ সুখে আছি। নিরন্তর গিলছি। ছুয়ে যাচ্ছি বিছানো সাদা চাঁদর। কোমল হাত।

নিরামিষ লাইফটা মাছ হয়ে গেলো

নিরামিষ লাইফটা মাছ হয়ে গেলো। লম্বা চওড়া হাতল ধরে টানতেই শুন্য দশমিক পাচ মাত্রায় তুমি এলে।

তুমি এসে বলতেই আমি হাল ছেড়ে দিলাম। বাড়ি এলাম। জানালা খুলে দিলাম।

জানো কান্তা, ওর গলাটা দারুন ছিলো। মোহিত হতাম পাকা জহুরীর মতো।

জহুর ভাইয়ের কথা তো জানোই। রোজ রাতে গলা ছেড়ে দিতো। এফ এম ব্যান্ড। বেশ দূরে সরে যেতো কিলোহার্টজ ছাড়িয়ে।

গত শীতে নিরামিষ ছিলাম। রক্তহীন ছিলাম। কাঁচা সবজীর মতো চিবোতাম গজল। মির্জার কথা তো জানোই। বেচারা না থেকেই বেশ জ্বালাতো আমাকে। রাত হলেই ডাইনিং টেবিল বরে কিছুই থাকতো না।

বেশ কাটাকুটি করতাম শোভনের সাথে। প্রায়ই ভয়ানক রকম কবিতাগুলো আবৃত্তি করে শোনাতো। ঘুম ছেড়ে তাসের আড্ডা।

তুমি ছিলে না। তাই আর্দ্রতা ছিলো বাড়াবাড়ি রকমের। দু’চারদিন আগেও হের ফের ছিলো না।

নিরামিষ খেতাম। সবজীগুলো চিবোতাম বয়েলিং টেম্পারেচারে।

সে কাঁদছে

সকাল হতে আমি কথা বলিনি ...

সে কাঁদছে । ঝরছে মুক্তোদানা,

দুপুর গড়াবে বলে ঘুম আসে না,
বদলায় সংকলন

মন খারাপ করতে নেই
বলে আমি ওর নিষ্পাপ চোখের দিকে তাকিয়ে
ভাষাতত্ত্ব সংশোধন করি

ভাবছি, এবার ড্রয়িং খাতাজুড়ে একেঁ দেবো
পৃথিবীর সব রঙিন কান্না

তার স্মিতহাস্য
============

এই লেখাটি এখানেও পাবেন............... =>